বাইরে থেকে দেখলে কাশবাগকে ঢাকা শহরের আর দশটা পাড়ার মতােই মনে হয়। কিন্তু কাশবাগ আসলে আলাদা। এখানে আড্ডা দেওয়া নিষেধ। নিয়ম ভেঙে আড্ডা দিলে নানারকম লঘু ও গুরুদণ্ড দেওয়া হয়। এলাকার মুরুব্বীদের যুক্তি, আড্ডা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে কাশবাগের ঘরে ঘরে মাদকের ছড়াছড়ি নেই, গলির মুখে বখাটেদের উৎপাত নেই, অন্যের বউ নিয়ে ভেগে যাওয়ার ব্যাপার নেই। আছে কেৱল সুখ ও শান্তি। কিন্তু আসলেই কী তাই? তাহনে কুড়ি হাজার মানুষের পাড়ায় এমন অস্বাভাবিক হারে মানুষ আত্মহত্যা করছে কেন? কাশবাগের উদ্ভট নিয়মের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তােলে নবাগত এক তরুণ। আড়া নিষিদ্ধ হওয়ার পেছনের কাহিনী খুঁজতে গিয়ে সে আবিষ্কার করে আন্তঃধর্মীয় এক প্রেমের ঘটনা। যার জের ধরে ঘটে নৃশংস খুন। সম্পত্তির লােভ না সম্মান, নাকি অন্যকিছু কাশবাগে আড্ডা নিষিদ্ধের পথে মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে? নিয়াজ মেহেদীর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘আড্ডা দেওয়া নিষেধ’ বিরল ক্যানভাসের এক স্বল্পায়তন উপন্যাস। যা স্পর্শ করেছে দেশভাগ, ষাটের দশকের। ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে বাবরি মসজিদ নিয়ে দাঙ্গার মতাে অনেকগুলাে সংবেদনশীল ঘটনা। ‘আড্ডা দেওয়া নিষেধ’ আপনাকে ভাবাবে, এর টানটান গদ্য আপনাকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখবে; গল্প বয়ানের কৌশল মুখােমুখি করবে এমন অনেক প্রশ্নের, ভবিষ্যতের স্বার্থে যার উত্তর জানা জরুরি।
নিয়াজ মেহেদীর জন্ম রংপুরের বেনীপুর গ্রামে, ২৯ আগস্ট ১৯৮৯ সালে। মা-বাবার জ্যেষ্ঠ সন্তান নিয়াজের হাতেখড়ি পত্রিকার ছোটদের পাতায় লিখে। একসময় লেখালিখি ভুলে গিয়েছিলেন। প্রত্যাবর্তনের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান তাঁর অনুজ নাবিল মুহতাসিম ও অগ্রজ লেখক মশিউল আলমের। ২০১৮ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম উপন্যাস আওলাদ মিয়ার ভাতের হোটেল বিপুলভাবে সমাদৃত। এরপর লিখেছেন উপন্যাস আড্ডা দেওয়া নিষেধ ও ধাঁধার থেকেও জটিল। ছোটগল্পের দুটি বই বিস্ময়ের রাত ও মর্কট মঞ্জিল। তাঁর ছোটগল্প প্রকাশিত হয়েছে প্রথম আলো, রহস্য পত্রিকা, ইত্তেফাক, কালের কণ্ঠ, বণিক বার্তা ও কিশোর আলোর পাতায়। রাত নদী হয়ে যায় বয়ে তাঁর চতুর্থ উপন্যাস