"নৈরাজ্য নেই রাজ্য" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: “তাকিহিতাে একটির পর একটি মর্গের ফ্রিজের ডালা খুলতে থাকে। আর নিষ্পন্দ, নগ্ন, শান্ত, সৌম্য ও সুন্দর-আশ্চর্য সফল এক পাল নগ্ন নর-নারী পাউডার, রুজ ও লিপস্টিক মাখা ঠোটে আমাদের দিকে চেয়ে মুচকি হাসতে থাকে। .. তারা ছিল লাল, নীল, রূপালী ও নীরব! ... লিটুর জায়গায় শিহাব বা সুমন থাকলে কি বলত যে বুড়াে একতারা বাদক’ ছবিটাও তার পিকাসাের ‘দ্য ওল্ড গিটারিস্ট'-এর প্রভাবে প্রভাবিত? ক্যাম্পাসে জােগান শুরু হয়েছে। ছাত্র ইউনিয়ন মতিয়া ও মেনন গ্রুপ আর ছাত্রলীগ-তিন বড় দল মিলেই ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করছে। আমি, ইশতিয়াক, প্রদীপ-তিনজনই ছটফট করতে থাকি। গতকাল একটি রাস্তার কাগজ-কুড়ানি বাচ্চা পুলিশের গুলিতে নদীর পাশে আমাদের ছােট্ট শহরের ধূলিধূসরিত পার্কে মারা গেছে। আজ তার লাশ নিয়ে বড় মিছিল হবে। এখন বুঝি জার্মানির কোন লিপজিগ শহরের এক হুসাৰ্ল সাহেবের জন্ম-মৃত্যুঅধ্যয়ন-বিবাহ-দর্শনের খবর আমাদের ভালাে লাগবে? মিশরে প্রতি ১৪৬০ বছরে একবার নীলনদের বন্যা নামে যে তারার কারণে, পারস্যে সেই তারাকে বলে বৃষ্টি তারা। ৩৬৫ দিনের হিসেবে ৩৬৫ জন যুবক গাঢ় বেগুনী রঙের পােশাক পরে নতুন বছরের যে অভিনয় করতাে অগ্নি উপাসক দিনগুলােয়, তা আজো পার্সী। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অবিদিত নয়। ঐ তাে রাতের আকাশে দেখা যাচ্ছে পার্সী জ্যোতির্বিজ্ঞানের চার রাজকীয় নক্ষত্র : আলদেবারান, রেগুলাস, আস্তারেস আর ফোমালহােত। স্বর্গের চার পাহারাদার ... কোন রিপ্লাই আসে না। মেসেজ আনসীন। খুব অস্থির লাগে। পত্রিকা জুড়ে গাইবান্ধার গােবিন্দগঞ্জে আখ চাষের জমিতে দাউ দাউ আগুন জ্বলার দৃশ্য। এক সাঁওতালের মৃতদেহ ধান ক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছে ৩০ জন। সাঁওতালদের ধান-পাট, গবাদিপশু লুট করা হয়েছে। অবাস্তব স্যুররিয়ালিস্টিক সব ইমেজ পত্রিকার পাতায় ছড়ানাে যেমনটা রােজ থাকে। ... বাবা-মা-রশিদ পাগলের মত এ্যাম্বুলেন্স ডেকে বাসার কাছেই ‘জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হসপিটালের রিসেপশন থেকে হৈমন্তীকে যখন মাত্রই স্ট্রেচারে তুলে দিতে সাদা শাড়ির সিস্টার হৈমন্তীর হাতে সুঁই ফুটিয়ে ক্যানােলায় যুক্ত করছেন সালাইনের নল, বারাে বছরের কিশাের করিমউদ্দিন তখন নারকেলডাঙা রেল কলােনীর পাশ থেকে বড়বাজারে কংগ্রেসের মিছিলে ছুটছিলেন।