বাংলাদেশ : স্বাধীনতা ও ন্যায়ের সন্ধানে" বইটির ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পটভূমি এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে এর অভিযাত্রাই এ বইয়ের বিষয়বস্তু। ড. কামাল হােসেন আমাদের ইতিহাসের সেই গুরুত্বপূর্ণ কালপর্বের প্রত্যক্ষদর্শী, সাক্ষী এবং অংশীও। কখনাে নেপথ্যে থেকে আবার কখনাে প্রকাশ্যে তিনি এই ইতিহাস নির্মাণে ভূমিকা রেখেছেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষের অন্যতম আইনজীবী। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের ডাকা গােলটেবিল বৈঠকে তিনি। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে সাংবিধানিক পরামর্শদাতা হিসেবে যােগ দেন। ১৯৭০-এর নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্রের খসড়া প্রণয়ন এবং তার ভিত্তিতে ইয়াহিয়া, ভুট্টো এবং তাদের সহযােগীদের সঙ্গে আলােচনায়ও তিনি বঙ্গবন্ধুর সহযােগী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের বন্দিশালা থেকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেশে ফিরে আসেন। তারই নেতৃত্বে প্রণীত হয় বাংলাদেশের বাহাত্তরের সংবিধান। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি স্থাপনেও বঙ্গবন্ধু সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসের সেসব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, জানা-অজানা নানা তথ্য ও ঘটনাকে লেখক নিজের অভিজ্ঞতার আলােকে বস্তুনিষ্ঠভাবে তুলে ধরেছেন। ঘটনাপ্রবাহের বর্ণনা ও ব্যাখ্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে লেখকের অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়ন বইটিকে অনন্য বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের পূর্বাপর ইতিহাস জানতে ও বুঝতে পাঠককে বইটি সহায়তা করবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রেক্ষাপট এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে এর অভিযাত্রাই এ বইয়ের বিষয়বস্তু। ড. কামাল হােসেন আমাদের ইতিহাসের সেই গুরুত্বপূর্ণ কালপর্বের সাক্ষী ও সক্রিয় অংশগ্রহণকারী। তার অভিজ্ঞতার আলােকে আমাদের ইতিহাসের সেই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে তিনি এ বইয়ে তুলে ধরেছেন।
ড. কামাল হােসেন জন্ম ১৯৩৭ সালের ২০ এপ্রিল। আইনবেত্তা ' ও রাজনীতিক। ১৯৫৮ সালে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিসিএল এবং ১৯৬৪ সালে আন্তর্জাতিক আইনে পিএইচডি ' ডিগ্রি লাভ করেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর পক্ষের অন্যতম কৌঁসুলি হিসেবে এবং পরবর্তী সময়ে আইয়ুব খান আহত গােলটেবিল বৈঠকে ও ইয়াহিয়া-ভুট্টোর সঙ্গে আলােচনায় বঙ্গবন্ধুর শাসনতান্ত্রিক পরামর্শদাতা হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন। এ সময় বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নে তিনি নেতৃত্ব দেন। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন।। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের তিনি একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।