দুই বাংলার লেখক কিংবা লেখালেখি নিয়ে হরহামেশাই কথা হয় সাহিত্য-আড্ডায়, নয়তাে ব্যক্তিগত আলােচনায়। সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে নানা আয়ােজনও চলে বছরব্যাপী। সভা-সমাবেশ বা সাহিত্য-সম্নেলনে সুযােগ ঘটে একে অপরের সঙ্গে আলাপ-পরিচিত হওয়ার। পারস্পরিক ভাব-বিনিময় ঘটে একই ভাষায় লিখিয়েদের মধ্যে আলাদা দুই ভূখণ্ডে বসেই। তবুও কোথায় যেন একটু খামতি রয়ে যায়। সেতুটি ঠিক আঁটোসাঁটো হয় না যেন। ফলে প্রশ্ন ওঠে, কতখানি সংযুক্ত আছে বাংলাভাষার লেখকদের মধ্যে? কতখানি অনুসন্ধান চলে, কারা কেমন কী লিখছেন? বাণিজ্যিক কিংবা অবাণিজ্যিক পত্রিকার কল্যাণে যদিও খানিকটা তার খোঁজ পাওয়া যায়। তবে সে অংশ খুবই সীমিত। ভালাে পত্রিকার অপর্যাপ্ততা, অপ্রাপ্যতাই এর জন্য দায়ী। বাংলাতেই লিখছেন অথচ একে অপরের সাহিত্যকর্ম পড়া তাে দূরের কথা, নামটি পর্যন্ত শােনেননি—এমন উদাহরণ অসংখ্য। নানামাত্রাতেই তাে এই দূরত্ব ঘােচানাের প্রয়াস চলছে। কি শরীরে, কি ভাচুয়ালে। তারপরেও দূর হচ্ছে না দূরত্ব। কেন এই বিচ্ছিন্নতা? এর কি কোনাে সমাধান নেই? লেখক-প্রকাশকসম্পাদকের মধ্যকার সংযােগের মাধ্যমটি আসলে কী হতে পারে? এই গ্রন্থটি প্রণয়নের উদ্যোগটি সেই প্রশ্নকে সামনে রেখেই করা হয়েছে। সেতুটিকে দুই মেরুতে বাঁধতেই এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
জন্ম ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্র গাঙ্গিনারপাড়ের অধুনালুপ্ত লালালজে (স্থানীয় ভাষায় যা ‘লাইলিপট্টি’ নামে পরিচিত ছিল)। এখন রাজধানী ঢাকাতেই অস্থায়ী বাস। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। পেশাগত জীবন শুরু হয় শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় কাজের মধ্য দিয়ে। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন সম্পাদিত ‘জেন্ডার ও উন্নয়ন কোষ’ গ্রন্থ প্রকল্পে কাজ করেছেন গবেষণা-সহকারী হিসেবে। এরপর পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেডের ‘ভাষা বিভাগ’-এর দায়িত্বভার পালন করেন। সেখান থেকে বাংলা একাডেমি পরিচালিত ‘বাংলা ভাষার বিবর্তনমূলক অভিধান’ প্রকল্পে গবেষক ও সংকলক হিসেবে কাজ করেছেন। আবার ফিরে আসেন সাংবাদিকতা পেশায়। বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল পরিবর্তন-এ। এরপর দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে কাজ করছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। কবিতাই মূলত তাঁর যাবতীয় স্বপ্ন-বুননের জায়গা। পাশাপাশি বিচরণ করেন গল্প, প্রবন্ধ, ফিচার, সাহিত্য-সমালোচনা, সম্পাদনাসহ সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায়। পড়তে ভালোবাসেন খুব। তাই নেশার তালিকায় সবসময় প্রথম ও প্রধান হিসেবে রাখতে আগ্রহী বইপড়াকে। প্রকাশিত গ্রন্থ : জলের উপর জলছাপ (কাব্যগ্রন্থ, শুদ্ধস্বর প্রকাশনী-২০১০), আবছায়া আলো-অন্ধকারময় নীল (কাব্যগ্রন্থ, বিজয় প্রকাশ-২০১১), রবীন্দ্রনাথ : জীবনে মৃত্যুর ছায়া (গবেষণা-প্রবন্ধ, মূর্ধন্য-২০১১), তুমুল কোলাহলে কুড়াই নৈঃশব্দ্য (কাব্যগ্রন্থ, অনুপ্রাণন প্রকাশন-২০১৪), মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (জীবনীগ্রন্থ, কথাপ্রকাশ-২০১৬)।