"আদি ঢাকাইয়া খানাপিনা" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ মুঘল রাজধানী হিসেবে ঢাকার অভ্যুদয় ঘটে সপ্তদশ শতাব্দীতে। নগরায়ণের মতাে খাবারেও রয়েছে ঢাকার ৪০০ বছরের ঐতিহ্য। পুরান ঢাকার খাদ্য-পানীয়ে একটা দীর্ঘকালের অভিজ্ঞতা ও ঐতিহ্যের সঙ্গে লেগে থাকা আপাত বিলুপ্ত খানদানি আভিজাত্যের সংযােগ একে একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। স্বাদে-গন্ধে-পরিবেশনে এই খাবার ঠিক বাঙালির চিরায়ত খাদ্যের সঙ্গে পুরােপুরি মেলে না। তাতে মিশে আছে তুর্কি-মােঘল খাদ্যের রীতি। রাজধানী ঢাকার খাবারের বিশেষত্ব মােঘলাই খাবার, ঢাকাই কাবাব আর বাকরখানি। মােঘলরাই এদেশে কাবাবের প্রচলন করে। এখন ঢাকাই খাবার বলতে আমরা যেগুলাে বুঝে থাকি যেমন পােলাও, কোরমা, কালিয়া, রেজালা, কাবাব, বিরিয়ানি, শরবত ইত্যাদির চল শুরু হয় সুলতানী আমলেই। বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকায় চা পান জনপ্রিয়তা লাভ করে। মালাই-ভাসা চায়ের খুব কদর ছিল। বিশ শতকের ঢাকার ত্রিশের দশকের খাবার ছিল মাছের কাবাব, মােরগের রেজালা, নারগিসি পােলাও, কাবাব ও বাকরখানি। মিষ্টি, নােনতা, দুধওয়ালা, মাখওয়ালা- নানা রকম বাকরখানি পাওয়া যেত ঢাকায়। আমি মনে করি ঢাকার বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী খাদ্যগুলােকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌছে দেয়াই আমার দায়িত্ব। কারণ আমি ঢাকাইয়া, ঢাকা আমার গৌরব।