সময়ের ব্যাপকতা ইচ্ছের ঘুড়ি হয়ে হৃদ-আকাশে উড্ডীন, ধারণ করবার সাহস নেই। কিছু বর্ণিল-অবর্ণিল-অরণিম-তামসিক মুহূর্ত সত্তার ভেতর ঘূর্ণাবর্ত তৈরি করে আবার মিলিয়ে যায়। মোহ আর মোহমুক্তির ভেতর আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক মন-মনীষাকে ধারণ করার আকাক্সক্ষা সুতীব্র। সে তীব্রতা কলমের ডগা ফেটে আজ আর বের হয় না, বরং অন্তর্জালের বিভিন্ন সাহিত্য গ্রুপে নিয়েছে ঠাঁই। ছোট বেলা থেকে শব্দের সাথে বসবাস-কিছু হয়ে ওঠার তাড়নায় নয়, নিছক শব্দের ভেতর নিমজ্জন। আয়োজন করে ঘনবিন্যস্ত নিবিড়তায় মনো-জগতে কবিতা কখনো বাসা বাঁধে নি। কর্ম-অবসরে, সভা-সমিতি-সেমিনারের বুদ্ধিবৃত্তিক তাত্ত্বিক চর্চার বিধিবদ্ধ কাঠামোতে আপাত বিচ্ছিন্ন চেতনার যতোটুকুই ফাঁক-ফোঁকর তাতে যে ভাবের উদয় হয় তা কতটা কবিতা হয়ে ওঠে- প্রশ্নসাপেক্ষ! পাশাপাশি অন্তর্জালের বিভিন্ন সাহিত্যগ্রুপে পোস্ট করা কবিতাগুলো স্থান করে নিয়েছে প্রিয়, অপ্রিয় সমালোচনায়। তথাপিও শব্দবুননের যে ব্যর্থ অপপ্রয়াস- তা অতি আপন, স্বকীয় মনে হয়। সেগুলোকে একত্রিত করে গ্রন্থ নির্মাণের এক দুঃসাহসী অপচেষ্টা। বিপন্ন সমকালের অবরুদ্ধ আবহে আত্মগত ভাবনায় চর্চিত ও আবর্তিত শব্দবন্ধ অতি প্রিয়। একই শব্দের বহুমাত্রিকতা তাই অনিবার্য অনুষঙ্গেই প্রায় কবিতাতে বিবৃত। ইচ্ছাকৃত ভাবেই এ উদ্যোগের সারথি। ত‚ন বা তীর রাখার আধারকে নিষঙ্গ বলা হয়। নিষঙ্গ ধারণকারী একজন নিষঙ্গী শিকারের নেশায় নিষাদ হয়ে উঠলেও নিয়ন্ত্রিত যুদ্ধক্ষেত্রে অক্ষম ক্রোধ ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। এ কাব্যগ্রন্থে শব্দ বুননের এ উদ্যোগ কাব্যপ্রেমী পাঠকের মস্তিস্কে একটু হলেও সাড়া দেবে বলে বিশ্বাস।