উৎসাহ, অনুপ্রেরণা, নীতিজ্ঞান, দেশপ্রেম ইত্যাদি নানা বিষয়ে প্রায় প্রতিনিয়তই ছড়া রচিত হচ্ছে। প্রত্যেক ছড়াকারেরই একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক পাঠক থাকে; এর বাইরেও যখন ছড়াটি ছড়িয়ে পড়ে তখন তিনি ছড়াকার হিসেবে আরো পরিচিতি পান। হয়ে ওঠে তার ছড়া জনপ্রিয়। ‘ভয় তাড়িয়ে জয়’ ছড়ার বইটি লিখেছেন জসিম আহমেদ। ‘ভয় তাড়িয়ে জয়’ এ বইয়ের প্রথম ছড়া। এই ছড়াটির নামেই বইয়ের নামকরণ করেছেন ছড়াকার জসিম আহমেদ। প্রথমেই এই ছড়াটির কিছু অংশ পাঠ করা যাকÑ ‘ইলিয়াস পড়ে চলে কত গ্রা-মার ইংলিশে কথা শেখা হয় নাই তার। এই যেন বলে ফেলে ইংলিশে কথা অকারণে আটকায় ঘোরে শুধু মাথা।’ এই ছড়াটি মূলত ইংরেজি শিক্ষার ভীতি নিয়ে লেখা হয়েছে। ইলিয়াস ক্লাসের ফার্স্ট বয়; কিন্তু সে যখন ইংরেজিতে কথা বলতে চায় তখন আটকে পড়ে! আর এই দুর্বলতার কারণ হলো ইলিয়াস ইংরেজিতে কথা বলেতে গেলে ভাবে যদি ভুল হয়ে যায়। অন্যদিকে ইলিয়সের বন্ধু মিলটন তার চেয়ে কম ভালো ছাত্র হয়েও ইংরেজিতে কথা বলতে পারে। কারণ সে কথা বলার সময় কোনো ভয় পায় না। এই ছড়াটি মূলত ইংরেজি শিক্ষার প্রতি উৎসাহ প্রদানের জন্যই লিখেছেন ছড়াকার। পড়াশোনা নামে আছে বেশি আছে নেট রোগ ভাবে যেন মনে হয় ই-বুকে মনোযোগ। শর্টকাট পাস খোঁজে নেটে ঘেঁটে প্রাণপণ লোড নিয়ে প্রিন্ট দেয় একগাদা সাজেশন। এই ছড়াটি আমাদের সময়ের ছাত্রদের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রযুক্তির ওপর বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীরা এতই নির্ভর যে তারা এখন আর মূল বইপত্র ছুঁয়েও দেখতে চায় না! কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভরতা আমাদের মেধাশক্তি দুর্বল করে দিচ্ছে। একই সাথে আসক্তি তৈরি করছে নানা বিষয়ের ওপর। ফলে মূল শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা! ৪৮ পৃষ্ঠার এ বইটির ৪৮ পৃষ্ঠায় রয়েছে একটি স্বাধীনতার গান। সমবেত সংগীত হিসেবে অথবা এককভাবেও এই গানটি পরিবেশন করা যাবে। কাহারবা তালের এই গানটির কথা ও সুর করেছেন জসিম আহমেদ নিজেই। বিশ্বায়ন ও অপসংস্কৃতির প্রভাবে আমাদের বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি আজ হুকির মুখে। সেখান থেকে একটি জাতিকে ফিরিয়ে আনতে এবং সঠিক পথে পরিচালিত করতে এসব ছড়া, কবিতা খুবই প্রয়োজন। উন্নয়ন শুধু অবকাঠামোগত হলেই হবে না, উন্নয়নের জন্য চাই সঠিক মননচর্চা ও সৃষ্টিশীল কাজের পরিবেশ। বইটি সবাইকে এই বর্তা দিতে চেয়েছে।