‘অর্পা ও রঙিন প্রজাপতি’ একটি ব্যতিক্রমী গল্পের বই। শিশুরা সব সময়ই সুন্দর। কিন্তু আমাদের মাঝে অনেক শিশু-কিশোর রয়েছে যাদের নানা রকম শারীরিক সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। কারো হয়তো কথা বলতে সমস্যা, কেউ হয়তো চোখে দেখতে পায় না। কারো হাত নেই, কারো পা নেই, কারো কারো শারীরিক উচ্চতা বৃদ্ধি পায় না। কারো ঘটে না বুদ্ধির বিকাশ। এরা আমাদের বোঝা নয়। এরাও আমাদের মতোই মানুষ। এদের প্রতি আমরা যতœশীল ও সহযোগিতাপরায়ণ হলে তারাও তাদের প্রতিভা ও মেধা দিয়ে ভালো কিছু করে দেখাতে পারে। এমনই একটি শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে, যার দুই হাত নেই, তাকে নিয়ে লেখা এ গল্পের বইটি। স্কুলের শিক্ষকরা বলেছেন―সাদা কাগজে লাল রং দিয়ে ‘মা’ লিখে আনতে। কিন্তু অর্পার তো হাতে আঙুল নেই। সে কী করে লিখবে! ফুলের বাগানে অর্পার বেশ ভালো বন্ধু আছে। আর সেই বন্ধুরা হলো প্রজাপতি। প্রজাপতিদের সাথে অর্পার ভীষণ ভাব। এ কথা জানতে পেরে প্রজাপতিরা অর্পাকে ‘মা’ লিখে দিল। অর্পা অনেক খুশি হলো। কিন্তু এরপর মায়ের ডাকে ঘুম ভেঙে গেল। আসলে অর্পা স্বপ্ন দেখছিল। মা বলল, আজ তো একুশে ফেব্রুয়ারি। তুমি শহিদ মিনারে যাবে না? ঘুম ভেঙে অর্পা দেখল তার মাথার কাছে কাগজে সত্যিই মা লেখা আছে। অর্পা তো অবাক হয়ে যায়। মাকে জিজ্ঞেস করে কে লিখে দিয়েছে? মা বলে, অয়ন লিখে দিয়েছে। এরপর আরো অনেক ঘটনা রয়েছে, যা বইতে পড়া যাবে। আমাদের চারপাশ ও স্কুল-কলেজে এমন অনেক শিশু- কিশোরদের দেখতে পাওয়া যায়। আমরা অনেকে না বুঝে তাদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে থাকি। এটা কিন্তু একদমই উচিত নয়। বরং আমাদের উচিত হবে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা। তাদের সমস্যা হয় কি না, সেসব জানা। তাদের কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন আছে কি না, জানতে চাওয়া। যদি প্রয়োজন থাকে সেই প্রয়োজন মেটাতে চেষ্টা করা। বই পড়ে শুধু আনন্দ পেলেই চলবে না। এর থেকে যে শিক্ষা পাওয়া যায় তা জীবনে কাজেও লাগাতে হবে। তবেই এই শিক্ষার উপযুক্ত ব্যবহার করা হবে। এমন একটি ব্যতিক্রমী গল্পের বই সবারই সংগ্রহে রাখা উচিত।