এই গ্রন্থ প্রসঙ্গে এ গ্রন্থের লেখাগুলোতে লেখকের সাহিত্যবোধ ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রকাশ আছে। পড়তে গেলে বোঝা যায়, লেখক আন্তরিক তাগিদে লিখেছেন। লেখক অনুভব করেন যে, বাংলাদেশের মানুষ পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে সচেতন ও সচেষ্ট হলে, সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে, অনেক সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে। কিন্তু মানুষ উদাসীন। লেখক উচ্চ পর্যায়ের একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি বিশেষ আগ্রহের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা অবলোকন করেন। তিনি উপলব্ধি করেন যে, শুভ ইচ্ছা ও সহানুভূতি নিয়ে স্বল্প চেষ্টাতেই অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব। যাঁরা ক্ষমতাবান, সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন, তাঁরা যদি তাঁদের দুর্বল অবস্থানের আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় তাহলে দুর্বলরা অনেক কষ্ট থেকে রেহায় পেতে পারেন। লেখক উন্নত মূল্যবোধের অধিকারী। সমাজের অভ্যন্তরে মানুষের মধ্যে তিনি মূল্যবোধের উন্নতি কামনা করেন। সে জন্যই তিনি এসব লিখেছেন। নিজের অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণের কথা তিনি এমনভাবে লিখেছেন যে, এগুলো নীরস উপদেশ হয়ে যায়নি। পাঠক স্বত:স্ফুর্তভাবে জাগ্রত হোন, এটাই লেখকের কামনা। লেখক লিখেছেন আত্মকথা বলার রীতিতে। ভাষা ও রচনারীতিতে তিনি সুন্দর ও আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করেছেন। আমার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এ গ্রন্থের লেখাগুলো বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং রচনারীতির দিক দিয়ে সুন্দর ও সুখপাঠ্য। উন্নত প্রযুক্তির অভিঘাতে মানুষের প্রতি মানুষের আকর্ষণ কমে যাচ্ছে। এই অবস্থায় এ ধরণের গ্রন্থ পাঠকদের মনে মানুষের প্রতি আগ্রহ জাগাবে। আমরা চাই মানুষের প্রতি মানুষের আস্থা ও আগ্রহ বৃদ্ধি পাক। আবুল কাসেম ফজলুল হক প্রাক্তন অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।