‘চাঁদের পাহাড়’-এর প্রথম লেখা ‘চাঁদের পাহাড়’ অনুসরণেই গ্রন্থের নামকরণ। অকালপ্রয়াত দুই শিশুপুত্রের ইতিবৃত্ত ও প্রাসঙ্গিকতা বর্ণনে বিষয়টি আর ব্যক্তি-পারিবারিক শোকাবহতা থাকে না, সামগ্রিক বিস্তৃতিতে তা এক আদিগন্ত ক্রন্দনে পর্যবসিত হয়। সংগ্রাম মুখরতার মধ্য দিয়ে পূর্ণ সাফল্যে নিজ জীবন বিনির্মাণ, অকালপ্রয়াত দুই শিশুপুত্রের স্মৃতি প্রবলভাবে আলোড়িত করেছে তাঁকে। সুজীবনের প্রত্যয়ে স্ব-অঙ্গীকারাবদ্ধতায় তাঁর সকল কর্মপ্রয়াসকে তিনভাবে ভাগ করে প্রাপ্ত জীবন দৈর্ঘ্যরে এক-তৃতীয়াংশ কেবলমাত্র সমাজ ও মানুষের জন্য পূর্ণ নিবেদনে সংরক্ষিত রাখার প্রত্যয় আর প্রয়াত পুত্রদের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার আকুতিতে সুকর্মে আত্মনিয়োগ ও নিজেকে উৎসর্গের প্রভা গ্রন্থটিকে আদ্যন্ত অসামান্য চন্দ্রপ্রভায় মহিমান্বিত করে রাখে। এমনিভাবে সবকটি লেখায় জীবন বাস্তবতা, সমাজ সমীক্ষণ, দৈশিক আবহে নানাবিধ টানাপড়েন, শুভ-অশুভের দ্বা›িদ্বকতার চমৎকার উপস্থাপন সুপাঠ্য করে তুলেছে গ্রন্থটিকে। বিচিত্র সব চরিত্রের আগমন ঘটেছে। আমাদের চেনা পরিধিতিতেও অসামান্য ব্যতিক্রমী চরিত্রাবলি নিয়ত সঞ্চারণশীল। আমরা তা হয়তো দেখেও দেখি না। লেখক রাশেদুল ইসলাম-এর অন্তর্ভেদী চোখকে এড়াতে পারে না এসব। তাই অপার মহিমাময় প্রভায় আলোকিত চরিত্র ‘পাগলামামা’ উঠে আসেন জীবন জগৎ সমাজ মানুষের বিচিত্র বিভ্রান্তি নিয়ে। অবলীলাক্রমে গ্রামীণ পটভ‚মির রহস্যাবৃত চরিত্র পাগলা মামা গ্রাম জনপদ নগরী ঢাকা ছাড়িয়ে বিশ্ব পরিধিতে বিস্তৃত হয় পড়েন। সৃষ্টি সভ্যতা সমাজ দর্শনের সকল বলয় অতিক্রমী সক্ষমতার অনন্যতায় তার মুখ দিয়ে বর্ণিত হয়, উন্মোচিত হয় সকল গ্রন্থিল জটিলতা।