মানুষের আবেগ ও অনুভূতিকে যা গভীরতমভাবে স্পর্শ করে এবং তা আলংকারিক রূপে প্রকাশ পায় সম্ভবত তাই কবিতা। আবেগ ও অনুভূতির যেমন স্থান-কাল নেই, তেমনি আবেগ ও অনুভূতি নিঃসৃত কবিতার আবেদনও স্থান ও কাল দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়। আবেগ ও অনুভূতির বিশুদ্ধতম বহিঃপ্রকাশ কবিতার রূপ শরীরী হলেও তার আবেদন স্থূলতা আশ্রিত নয় বলে বিশেষ সময়ে রচিত হয়েও আলোড়িত করে সকল সময়ের পাঠককেই। বহমান স্রোতধারার মতো তা পাঠকের হৃদয়ের সঙ্গে মিশে গিয়ে অনন্ত সাগরের সৃষ্টি করে। পাঠকের বই হৃদয়রূপ সাগরে আলোড়ন সৃষ্টি করার শক্তি নিয়ে আত্মপ্রকাশ ও অমরত্ব লাভ করেছে এমন কালজয়ী পুরুষের সংখ্যা সামান্যই। শামসুর রাহমান ও আল মাহমুদকে যদি আমাদের সমকালীন বাংলা কবিতার জগতে প্রতিনিধিত্বকারী চরিত্র হিসেবে ধরা যায়, তাহলে আমাদের হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। সমকালীন বাংলা সাহিত্যে আমাদের দেশের কাব্যচর্চা একটা সবল অবস্থান দখল করে রেখেছে। যারা সমকালীন বাংলা কবিতায় আমাদের এ অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছেন আমানুল্লাহ কবীর তাঁদেরই একজন। তাঁর কবিতার বিষয়বস্তু ও বর্ণনা বৈশিষ্ট্যের কারণে অনেক ভিড়ের মধ্যেও তাঁকে চেনা যায়। ইতিপূর্বে তাঁর দুটি কবিতাগ্রন্থ মুখোষবাড়ি, নদী, অন্ধকারের রূপ প্রকাশিত হয়েছে।