অমৃত এবং হলাহল- বিষ ও মধুর জীবন! বইটিতে রয়েছে ১৫টি গল্প। শুরুর গল্পটি হল অমৃত এবং হলাহল। এ গল্পের প্রধান চরিত্র জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। যিনি একজন লেখক। লিখতে লিখতে জীবনের এক জটিল ধাঁধায় ঢুকে গেছেন তিনি। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় চিন্তার সূত্রটি বিচ্ছিন্ন করে দেয়া। ড্রয়ার থেকে ম্যাচটা বের করে তিনি খাতাটায় আগুন লাগিয়ে দিলেন। মুহূর্তের মধ্যে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে উঠল। আগুনের লেলিহান শিখা তার আঙুল স্পর্শ করল। তিনি খাতাটা মেঝেতে ছুড়ে ফেললেন। ফরফর করে খাতাটা পুড়ে যাচ্ছে। তার এতো দিনের সমস্ত স্বপ্ন, সমস্ত চিন্তা, সব এক মুহূর্তে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। চোখের সামনে এই দৃশ্যটা তিনি সহ্য করতে পারছেন না। ড্রয়ারের ভেতর থেকে তিনি চাকুটা বের করলেন। এক মুহূর্তের জন্য তাকালেন নিজের কব্জির দিকে। তারপর চোখের পলকে ধারালো চাকুটা চালিয়ে দিলেন বাঁহাতের কব্জিতে। ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরিয়ে এলো। হাত চেপে তিনি বসে পড়লেন পুড়তে থাকা খাতাটার পাশে। গলগল করে রক্তধারা বয়ে যেতে লাগল আগুনের লেলিহান শিখার দিকে। রক্তধারার দিকে এগিয়ে আসছে আগুন আর আগুনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রক্তধারা। যেন একটা আরেকটাকে গিলে খাবে। কেন যেন হঠাৎ তার চোখে-মুখে এসে ভর করল একরাশ মুগ্ধতা। জীবনের এমন অপার্থিব সৌন্দর্য তিনি আগে কখনো দেখেননি। জীবন-মৃত্যুর দোলাচলে জয়ন্ত যখন ঝুলছেন তখনই শুনতেন পান এক মায়াবী নারীর ডাক। বিতস্তা নামের এক নারীর সেবায় তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন। লিখতে শুরু করেন আরেক প্রেমময় আখ্যান। তিনি প্রমাণ দিতে চান জগতে পেমের চেয়ে শক্তিশালী কিছু নেই। কিন্তু, একদিন সেই বিতস্তাই অন্য এক তরুণকে নিয়ে উপস্থিত হয় জয়ন্তর বাড়ি ! প্রেম কি আসলে অমৃত নাকি হলাহল ! জীবন কি বিষ না মধু ! সবগুলো গল্পই এই নামগল্পের ভাব ও অর্থ বহন করে। এক তরুণ লেখকের বেড়ে ওঠা, তার আহত-রক্তাক্ত-অস্থির সময়, সর্বপরি মানবসভ্যতার উত্থান ও পতনের ইতিহাস তোলা আছে এই ১৫ টি গল্পে