"শিখণ্ডী কথা" বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া যাকে নিয়ে আখ্যান, যার সুখ-দুঃখ কথা ফুল হয়ে ফুটে উঠবে নট-নটীদের অঙ্গে উপাঙ্গে শাখা-প্রশাখায়, যার বেদনা গীত হবে নাটকে, সে এখন মায়ের গর্ভে বাঁকানাে ত্বকের ছইয়ের নীচে ছােট্ট ভ্রুণ। এ ভ্রুণ জানে না কৈশরে সে পরিবার থেকে বিতাড়িত হবে, যৌবনে তার কামনা-বাসনা পচবে গলবে নিজের ভেতর, এক ভয়ানক বেদনায় নিজেকেই নিজে খুন করবার জন্য উন্মাদ হয়ে উঠবে, জীবন যন্ত্রনায় দগ্ধ হয়ে এ ভ্রুণ একদিন ঈশ্বরের মুখােমুখি দাঁড়াবে। এ নাট্যকথার ছােট্ট ভ্রুণ চাঁদ সােনা এক পুত্র শিশু হয়ে জন্ম গ্রহণ করে হিজলতলী গ্রামের রমজেদ মােল্লার পরিবারে। নাম হয় রতন মােল্লা। কিন্তু বয়ঃসন্ধিকালে আবিস্কৃত হয় সে অংশত নারী অংশত পুরুষ। জীবনের সমস্ত স্বাভাবিকতা বিনিষ্ট হয়ে জন্মের এক ভীষণ যন্ত্রণা সহস্রমুখাে দানবের মতাে জীবনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে তাড়িয়ে বেড়ায় তাকে। লিঙ্গ প্রতিবন্ধীদের সুখ-দুঃখ নিয়েই নাট্য শিখণ্ডীকথা। লিঙ্গ প্রতিবন্ধীরা নারী না হােক, পুরুষ না হােক একজন স্বাভাবিক মানুষের সম্মান যেন পায়-এই অভিপ্রায় সামনে রেখে এ আখ্যান শিখণ্ডীকথা।
শিখণ্ডীকথা প্রসঙ্গ: এক. এটি একটি নবতর সংস্করণ-যাতে লেখকের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ ও নতুন দৃশ্য। সংযােজিত হয়েছে। দুই. বাংলাদেশ গনপ্রজাতন্ত্রী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়, তথ্য মন্ত্রনালয় ও মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের ত্রয়ী আয়ােজনে নয়টি থিয়েটারের নয়জন নির্দেশকের নির্দেশনায় শিখণ্ডীকথা নাটক নিয়ে জাতীয় শিখণ্ডীকথা নাট্য উৎসব আয়ােজিত হয়েছে। তিন. শিখণ্ডীকথা নাটক ও লেখকের গবেষণা প্রবন্ধের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার হিজড়া সম্প্রদায়কে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি, ভােটাধিকার, ভাতা ও অনান্য সুবিধাদি দিয়েছে।