বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া স্পেসশিপ নিউরিনো থেকে কমান্ডার হাভার্ট, নভোচারী জুনি, কমান্ডো লাইডার এবং জীববিজ্ঞানী লিহাকে বিশেষ এক উদ্ধার অভিযানে লাল গ্রহে প্রেরণ করা হয়েছে। এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য লাল গ্রহে নিখোঁজ দুজন নভোচারীকে উদ্ধার করা। লাল গ্রহে অবতরণের প্রথম দিনেই লিহা নারকেলের মতো দেখতে স্বচ্ছ আঠালো তরলের লাল একটা অদ্ভুত প্রাণীকে তার পায়ে জড়িয়ে থাকতে দ্যাখে। সে চিৎকার করতেই লাইডার ছুরি দিয়ে লাল প্রাণীটাকে মাঝখান থেকে দুই টুকরো করে ফ্যালে। এতে ফল হয় উলটো। জ্বাল প্রাণীটা একটা থেকে দুটো হয়ে যায়। লাইডার আর দেরি করে না। ছুরি দিয়ে দুটো লাল প্রাণীকেই গেঁথে ফ্যালে মাটির সাথে। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ছুরির মধ্য থেকে বেরিয়ে আসে প্রাণী দুটো। লেজারগানও কিছু করতে পারে না লাল প্রাণীর। এমনকি অত্যাধুনিক অ্যাটমিক গানও ব্যর্থ হয়। শেষে কোনো উপায় না দেখে সবাই ছুটতে শুরু করে রেডিয়ো ট্রান্সমিশন স্টেশনের দিকে। স্কাউটশিপের সেখান থেকেই তাদের উদ্ধার করার কথা। ট্রান্সমিশন স্টেশনে এসে দ্যাখে লাল প্রাণীরা স্টেশনটাও দখল করে নিয়েছে। লাল প্রাণীরা যে এতটা বুদ্ধিমান তারা কেউ কল্পনা করতে পারেনি। মূল স্পেসশিপ নিউরিনোর কাছ থেকেও কোনো সাহায্য পাওয়ার আশা নেই। কারণ ততক্ষণে নিউরিনোর সাথে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এমনকি ফিরে গেছে তাদের নিতে আসা স্কাউটশিপটাও। এদিকে তারা যে পিছু হটবে সেই উপায়ও নেই। কারণ লাল প্রাণীরা চারদিক থেকে তখন তাদের ঘিরে ফেলেছে। শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছিল চার অভিযাত্রীর জীবনে? সত্যি কি লাল গ্রহে তারা তাদের অভিযান শেষ করে ফিরে আসতে পেরেছিল নিউরিনোতে? নাকি লাল গ্রহের ভয়ংকর লাল প্রাণীর নির্মম শিকার হতে হয়েছিল সবাইকে?
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। পেশায় একজন চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও লেখালেখির প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রচুর। এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন নিয়েই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। বাংলা সায়েন্স ফিকশন জগতে তার পোক্ত একটি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও মোশতাক আহমেদ এর বই সমূহ ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ক্ল্যাসিক, ভ্রমণ ইত্যাদি জঁনরাতে বিভক্ত। যেকোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতেই পছন্দ করেন। মোশতাক আহমেদ এর বই সমগ্র সংখ্যায় পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছিল ‘জকি’। এটি একটি জীবনধর্মী উপন্যাস। ২০০৫ সালে এটি প্রকাশিত হয়। মোশতাক আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে ফার্মেসি বিভাগে, পরে আইবিএতে। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ডের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনার খাতিরেই হোক বা কর্মজীবনের তাগিদেই হোক, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক ভ্রমণ করেছেন। সেসব ভ্রমণকাহিনীর আশ্রয়ে তাই ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোও। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড শুধু লেখালেখিতেই গণ্ডিবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাজারবাগের পুলিশ ও পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মোশতাক আহমেদ ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পায়। তাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে এ পর্যন্ত রয়েছে ২০১৩ সালের কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫ সালের সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার এবং সর্বশেষ সংযুক্তি হিসেবে সায়েন্স ফিকশন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭।