"বঙ্গবন্ধু ও অসহযোগ আন্দোলন" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বিভেদ-বৈষম্য লক্ষণীয় ছিল পাকিস্তান সৃষ্টির শুরু থেকেই। এই বিভেদ-বৈষম্য নিয়ে ২৩ বছর ধরে পূর্ব-পাকিস্তানের বাঙালিরা নানান আন্দোলন, দাবি-দাওয়া পেশ করার মধ্য দিয়ে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিল। অবশেষে ২৩ বছর পর পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের ভাঙনের বিষয়টি সামনে চলে আসে ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি পশ্চিম-পাকিস্তানি শাসকদের শাসন-শােষণের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করে। ৭ ডিসেম্বর ১৯৭০-এ অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে নজিরবিহীন ইতিহাস সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৬৭, জুলফিকার আলী ভুট্টোর নেতৃত্বে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৮৮, মুসলিম লীগ (কাইয়ূমপন্থী) ৯, মুসলিম লীগ কাউন্সিল-৭, মারকাজি জমিয়ত-উল-উলেমাই-ইসলাম (থানভি গ্রুপ) ৭, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ওয়ালী পন্থী) ৭, জামায়াতে-ইসলামী ৪, কনভেনশন মুসলিম লীগ ২, নির্দলীয়প্রার্থী ১৪ এবং পাকিস্তান ডেমােক্রেটিক পার্টি ১টি আসন লাভ করে। নির্বাচনের পর প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের যে পরিকল্পনা সামরিক সরকারের রয়েছে, নির্বাচন হচ্ছে তার প্রথম পর্যায় মাত্র। দ্বিতীয় পর্যায় হচ্ছে একটি শাসনতন্ত্র প্রণয়ন। এই জন্যই নির্বাচিত প্রার্থীদের আমি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে, জনগণ তাদের ভােট দিয়ে তাদের উপর বিরাট আস্থা স্থাপন করেছে।