বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে এটিই প্রথম বাঙলা অনুবাদ। বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বাঙলা ভাষায় দর্শনচর্চা করছেন। অনূদিত গ্রন্থটি তাদের সবার কাজে লাগবে বলে মনে করি। অনুবাদ যাতে মূলানুগ হয় সেদিকে অনুবাদক পর্যাপ্ত গুরুত্ব প্রদান করেছেন। এই শতাব্দীই প্রথম শতাব্দী নয় যেখানে আধিবিদ্যক তন্ত্র সমালোচিত হয়েছে। কিন্তু যখনই সেই রকম কিছু হয়েছে, তখনই এর সমালোচক ও সমর্থকরা লোককে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন যে, প্রসঙ্গটি এর আগে ওঠেনি, একমাত্র বিকল্প হল অধিবিদ্যার সম্পূর্ণ বর্জন অথবা সম্পূর্ণ স্বীকৃতি এবং আমরা উভয়পক্ষ জানি অধিবিদ্যা বলতে কী বোঝায়। এই গ্রন্থে বারোজন দার্শনিক এই সমস্ত বিতর্কিত বিভ্রম দূর করার চেষ্টা করেছেন, বিশেষত অধিবিদ্যার স্বরূপ নির্ধারণ করার জন্য। প্রবন্ধগুলোর বিষয়বস্তু ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে বিবিসি'র থার্ড প্রোগ্রাম নামক টকশো অনুষ্ঠানে সম্প্রচারিত হয়েছিল। তারা এখানে বিশেষ কোনো আধিবিদ্যক তত্ত্ব দেয়ার চেষ্টা করেননি, বরং অধিবিদ্যার সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করার চেষ্টা করেছেন। আর সমালোচকরা যেহেতু চিন্তা ও ভাষার সীমা নির্ধারণ করার চেষ্টা করেছেন, সেহেতু এটাই স্বাভাবিক ছিল যে তারা অন্ততপক্ষে এই প্রশ্ন তুলতেন যে আধিবিদ্যক বিবৃতি অর্থহীনতার পরিসীমার বাইরে পড়ে কি না। প্রবন্ধগুলোতে অধিবিদ্যার স্বরূপ সম্বন্ধে কোনো সাধারণ সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হয়নি। কিছু প্রবন্ধে বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়েছে যে কীভাবে নির্দিষ্ট কিছু আধিবিদ্যক তন্ত্র বিশেষ একটি শাস্ত্রের, যেমন বিজ্ঞান, ইতিহাস অথবা নীতিবিদ্যা ইত্যাদির চিন্তাভাবনা থেকে গড়ে উঠেছে। গ্রন্থটি শেষ হয়েছে। একটি সংলাপধর্মী আলোচনা দিয়ে, যেখানে অধিবিদ্যা সম্পর্কিত সমসাময়িক মতামতগুলোর পুনর্বিচার করা হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ের দর্শনের ইতিহাসের প্রেক্ষাপট থেকে। এই সংকলনে যাদের অবদান রয়েছে তাঁরা হলেন : জি. বাখডেল, পি. এল. গার্ডিনার, এইচ. পি. গ্রাইস, এস. এন. হ্যামশায়ার, আইরিশ মার্ডক, ডি. এফ. পিয়ার্স, এ. এম. কুইন্টন, প্রফেসর গিলবার্ট রাইল, পি. এফ. স্ট্রসন, জি. জে. ওয়ারনক, শ্ৰীমতী মেরি ওয়ারনক এবং বি. এ. ও. উইলিয়ামস। বাঙলা ভাষায় গ্রন্থটির অনুবাদ বা এর কোনো ভাষ্যগ্রন্থ এর আগে আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। তাই বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে এটিই প্রথম বাঙলা অনুবাদ। বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বাঙলা ভাষায় দর্শনচর্চা করছেন। অনূদিত গ্রন্থটি তাদের সবার কাজে লাগবে বলে মনে করি। অনুবাদ যাতে মূলানুগ হয় সেদিকে অনুবাদক পর্যাপ্ত গুরুত্ব প্রদান করেছেন।