“চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সঙ্গীরা” বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা : মুহাম্মদ শামসুল হক প্রায় ৪৩ বছর ধরে সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পাশাপাশি । মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণামূলক একাধিক গ্রন্থ রচনার জন্য সুধীমহলে প্রশংসিত । মুলত ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি দায়বােধ থেকে তার। কর্মে-লেখায় প্রাধান্য পেয়েছে ইতিহাস-আশ্রয়ী বিষয়। উপমহাদেশের রাজনীতিতে চট্টগ্রামের গুরুত্ব ব্রিটিশ যুগ থেকেই সর্বজনবিদিত। বিটিশবিরােধী স্বাধীনতা। আন্দোলনে সূর্য সেন, প্রীতিলতাদের আত্মত্যাগের কথা ইতিহাসে কিংবদন্তি হয়ে আছে। একইভাবে পাকিস্তান সৃষ্টির পর পূর্ব বাংলায় সংঘটিত সকল। আন্দোলন-সংগ্রামেও চট্টগ্রামের অবদান ইতিহাসে। সমুজ্জ্বল। পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগকে জনভিত্তি দেওয়ার জন্য পুরাে যৌবনে সারা দেশ চষে বেরিয়েছেন। স্বাধীনতার স্বপ্নপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । অপরিহার্যরূপে তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন চট্টগ্রামকে। চল্লিশের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে এখনকার বেশ কজন তরুণকে সহকর্মী ও বন্ধু হিসেবে পেয়েছিলেন তিনি। তাঁদেরসহ নতুন অনেককে পেয়েছিলেন ছয় দফা থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি পর্যায়ে। সেই অনুষঙ্গে তিনি ঢাকার পরই সবচেয়ে বেশি সফর করেছেন । চট্টগ্রামে ঘুরে বেরিয়েছেন জেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। এখানকার নেতা-জনতার সমর্থন-সহযােগিতা এবং ভালবাসাও পেয়েছেন অকণ্ঠ। বঙ্গবন্ধু ও তার সঙ্গীদের মধ্যে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের নানান দিক নিয়ে অনুসন্ধানী ও গবেষণালব্ধ এ গ্রন্থ পাঠককে নিয়ে যাবে ইতিহাসের নতুন এক গন্তব্যে।
জন্ম ১৮ অক্টোবর ১৯৫৬ সালে, চট্টগ্রামের পটিয়া। উপজেলার আল্লাই (কাগজিপাড়া) গ্রামে। বাবা মৌলভি নুরুল হক ও মা নূর খাতুন। ৭৭ সালে অধুনালুপ্ত দৈনিক জমানার হাত ধরে সাংবাদিকতার শুরু | জাতীয় দৈনিক প্রথম আলাের জন্মলগ্নে যুক্ত হয়ে প্রায় সাড়ে ১৫ বছর পর পদত্যাগ। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণা এবং লেখালেখিতে নিয়ােজিত। গত সাড়ে ৫ বছর ধরে প্রকাশ করছেন গবেষণামূলক সাময়িকী ইতিহাসের খসড়া। তিনি ১৯৭৭-৭৯ সালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ মহকুমা (পটিয়া) । প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোক্তা-সংগঠক এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন ও সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সােসাইটির সহসভাপতি ছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি, চট্টগ্রাম জেলা । কমিটির সভাপতি এবং খেলাঘর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কমিটির সহসভাপতি। তিনি একজন প্রাবন্ধিকও। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধনিবন্ধ প্রায় চারশ। প্রকাশিত গ্রন্থ ৮টি। মুহাম্মদ শামসুল হক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক লেখালেখি ও সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য একাধিক সম্মাননা পেয়েছেন। স্বাধীনতার বিপ্লবী অধ্যায়-বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্য-৪৭-৭১ গ্রন্থটি ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম । প্রেস ক্লাব আয়ােজিত বই প্রতিযােগিতায় । গবেষণা-সাহিত্যে সেরা গ্রন্থ নির্বাচিত হয় এবং তিনি সেরা লেখক-সাংবাদিক পুরস্কার পান।। ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপােরেশন তাকে 'একুশে স্মারক সম্মাননা পদক প্রদান করে।