"ইরান যেমন দেখলাম" বইটির 'আমার কথা' অংশ থেকে নেয়াঃ ইরানে ভ্রমণ করবার শখ আমার বহু দিনের। প্রায় ৪০ বছর ধারণ করেছিলাম এমন সুপ্ত আশা। ১৯৭০ সালের কাছাকাছি থেকে দেখা হয়েছিল তৎকালীন ইরানের মহাপ্রতাপশালী শাহ, রেজা শাহ পাহলভী-যিনি উপহার হিসাবে পারস্য (ইরান) এর সভ্যতার উপরে এক চিত্র সম্বলিত পুস্তিকা দিয়েছিলেন। কিন্তু ইরান দেখা হয়নি কারণ আমার সামরিক বাহিনীতে চাকরির কারণে। অবশেষে এই সুপ্ত আশা বাস্তবে রূপ নিয়েছিল আমার সুহৃদ বন্ধু ডা. ইকরাম ও তার ইরানি সহধর্মিণীর কারণে। প্রায় দুসপ্তাহ ধরে পারস্য সাম্রাজ্যে উত্তরণের হতে ইরানে সফর করেছি। প্রায় ২৫০০ বছরের সভ্যতার বিবরণ ভ্রমণ কাহিনীতে দেয়া সম্ভব হয় না তথাপি আমার মত করে চেষ্টা করেছি। ইরানের শুধু ঐতিহাসিক সভ্যতাই নয়। এ দেশ শিল্প সাহিত্যে বিশ্বকে সমৃদ্ধ করেছে। সাদী, হাফিজ, ফেরদৌসী আর ওমর খৈয়ামসহ অনেকে বিশ্ব সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে রেখেছেন। ওমর খৈয়ামের রুবাইয়াত’, ফেরদৌসীর বিশ্বখ্যাত শাহনামা’, হাফিজের দিওয়ান’, সাদীর গুলিস্তা, বােস্তান বিশ্ব সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। পারসেপােলিস’ অথবা ‘পাসারগ্রাড’-এর মত ২৫০০ বছরের আগের স্থাপত্য আজও মােহিত করে বিশ্ববাসীকে। এখানেই বিখ্যাত হয়ে চিকিৎসা শাস্ত্র ও দর্শনকে সমৃদ্ধ করেন ইবনে সিনা। বহু দর্শনীয় স্থান রয়েছে ইরানে। এই অল্প সময়ে যতটুকু দেখেছি তার বিবরণই তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি পাঠকদের সামনে। আশা করি যে আমার আগের এমন ভ্রমণ কাহিনীর মত এই ভ্রমণ কাহিনীটিও ভাল লাগবে।
Brigedier J.M. Sakaoat Hosen Ret. ১৯৪৮ সনের ১ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সনে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় দু’বছর পাকিস্তানের বন্দি শিবিরে কাটিয়ে ১৯৭৩ সনে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ১৯৭৫ সনের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ৪৬ ব্রিগেডে স্টাফ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৭৯-৮১ সনে ঢাকায় সেনাসদরে গুরুত্বপূর্ণ পদে অপারেশন ডাইরেক্টরেট নিয়োজিত হন। পরে তিনি ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দুটি ইনফেনট্রি ব্রিগেড ও একটি আর্টিলারি ব্রিগেডের অধিনায়ক ছিলেন। লেখক বাংলাদেশের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করে দ্বিতীয়বারের মত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিখ্যাত ইউ এস এ কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ জেনারেল কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তিনি পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিফেন্স এ ডি সি ইসলামাবাদ ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে মাস্টার্স এবং ২০১১ সনে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্, ঢাকা থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিরাপত্তা, ভূ-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী কলাম ও বইয়ের লেখক হিসেবে অধিক পরিচিত। এ পর্যন্ত তার তেইশটি বহুল পঠিত বই প্রকাশিত হয়েছে। তা ছাড়া দেশী-বিদেশী ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতি এবং নির্বাচন বিষয়ে বিশ্লেষক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। ২০০৭ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রয়েছে। ২০০৮ সনের জাতীয় এবং স্থানীয় সরকারের পাঁচ হাজারের বেশি নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা।