হাসসান বিন সাবিত রাযি. একজন বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিক ছিলেন। তাঁর কবিতায় যেমন ফুঁটে ওঠেছে নবী স. এর অনুপম দেহাবয়বের বিবরণ,তেমনি ইসলাম ও ইসলামের নবী স. কে নিয়ে অমুসলিমদের নানান কটুকাটব্য, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের জবাবে তাঁর কবিতাগুলো তীরেরমতো বিদ্ধ হতো শত্রুদের হৃদয়ে প্রিয় রাসুল স. তাই তাঁর জন্য মন ভরে দুআ করতেন। বলতেন, ‘হাসসান! তুমি এভাবে সত্যের পক্ষে, আমার হয়ে ওদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের জবাব দিতে থাকো, জিবরাইল আ. তোমার সহযোগিতা করবেন।’ শাইখ খালিদ আর রাশিদ সত্যিকার নির্ভীকচিত্তের একজন নবীপ্রেমিক দায়ী। কবি নন তিনি; তবে তাঁর শব্দচয়ন, কথার পিঠে কবি-সাহিত্যিকদের উপমা-উৎপ্রেক্ষার ব্যবহার থেকে তাঁর ভাষাজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তবে এ সব ছাপিয়ে শাইখের নিজস্ব এক পদ্ধতি আছে বয়ানের। হৃদয়ছোঁয়া কথায় লাখো-কোটি পথভোলা হৃদয় অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে প্রত্যাবর্তনের অনুপ্রেরণা খুঁজে পায়। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি শাইখের জগদ্বিখ্যাত আলোড়ন সৃষ্টিকারী দুইটি বয়ান ‘ইয়া উম্মাতা মুহাম্মদ’ ও ‘রাআইতুন্নাবিয়্যাহ ইয়াবকি’ -এর সাবলিল অনুবাদ। শাইখের দরদমাখা, তাত্ত্বিক আলোচনাকে আমরা সরল বয়নে তুলে আনার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, ভালো কিছু উপহার দিতে পেরেছি। আল্লাহ আমাদের এই প্রয়াসকে দীনের জন্য কবুল করুন। আমীন।
শাইখ খালিদ আর-রাশিদ—দাঈ। সৌদি আরবের পূর্ব-প্রদেশের শহর আল-খোবারে ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। মহল্লার মসজিদে হিফজুল কুরআনের হালকায় বসতেন। শৈশব থেকেই ফুটবলের প্রতি ছিল আকর্ষণ। তবে স্বপ্ন ছিল তিনি সামরিক অফিসার হবেন। ক্রিমিনোলজি নিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করার জন্য তিনি আমেরিকা চলে যান। পড়াশোনা শেষে তিনি নিজ দেশে ফিরে আসেন এবং ফুটবল খেলতে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। ১৪১২ হিজরির রমাজান মায়ের কথায় তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তিনি দীনি ইলম অর্জনে মনোনিবেশ করেন। এবং আল্লাহর পথে দাওয়াত দিতে গিয়ে প্রবল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ২০০৫ সালে ডেনমার্কের একটি পত্রিকা প্রিয় নবি সা.-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করলে তিনি প্রতিবাদী হন এবং গ্রেপ্তারি বরণ করেন।