একাত্তরের গণহত্যা ও নির্যাতন নিয়ে আমি বিগত প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছি। আমার প্রত্যক্ষ জরিপ অভিজ্ঞতা, দেশী-বিদেশী যৎসামান্য কিছু বইপত্র পড়ার অভিজ্ঞতা আর সরাসরি মানুষের সাথে কথা বলার অভিজ্ঞতা এই তিনকে মিলিয়ে একাধিক গ্রন্থ প্রণয়ন করেছি। আমার প্রথম বই ত্রিশ লক্ষ শহীদ: বাহুল্য নাকি বাস্তবতা প্রকাশের পর থেকেই ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়। বইটির প্রভাব এতদূর গড়ায় যে খালেদা জিয়া যখন একাত্তরের শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তখন মহান জাতীয় সংসদেও বইটি নিয়ে আলোচনা করা হয়। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে যথেষ্ট গুরুত্ব আর আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও বইটি সূলোভ মূল্যে ব্যাপক আকারে প্রচারের ব্যাপারে আমি তেমন আগ্রহী কাউকে খুঁজে পাইনি। আর পাঠক যাতে বিভ্রান্ত না হয়ে পড়েন সেজন্য উচ্চ মূল্যের হলেও বইটি আগের প্রকাশনী থেকে প্রত্যাহার করেও নেইনি। স্বল্প আয়েসে বইটি বের করার এই সুযোগটি আমাকে করে দিয়েছেন চৈতন্যের রাজীব ভাই। তার ঐকান্তিক চেষ্টায় অত্যন্ত কম মূল্যে এই বইটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে। আমি আশা করি এই বইটি একাত্তরের গণহত্যায় শহীদের সংখ্যা নিয়ে আমাদের দেশে চলমান বিভ্রান্তির ধোঁয়া কাটাতে ভূমিকা রাখবে। এই বইটিতে খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে একাত্তরের গণহত্যার ফ্যাক্ট ও ডকুমেন্টগুলোকে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছে। এই বইয়ের মূল লেখাটি প্রতিচিন্তায় প্রকাশিত হয়েছিল। সেটার ওপর কলম চালিয়ে আরও কিছু তথ্য যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। আমার এই গবেষণার পথে সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়েছি গবেষক এম এম আর জালাল ভাই, ওমর শেহাব ভাই, নিঝুম মজুমদার ভাই, যুক্তিঞ্চু ও আবুল কাশেমের লেখা থেকে। এই গবেষণার মূল অনুপ্রেরণা দুইজন, একজন বিজ্ঞান লেখক ডক্টর অভিজিৎ রায় এবং আমার বড়ভাই লেখক সুব্রত শুভ’দা। আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই তাদের প্রতি। আরিফ রহমান
১৯৯২ সালের ১২ মে ঢাকাতে জন্ম নেওয়া আরিফ রহমানের পিতৃনিবাস ফেনী জেলার ছাগলনাইয়াতে। এনজিও চাকুরে বাবা, গৃহিণী মা আর একমাত্র ছােট বােনকে নিয়ে তার সংসার। ছেলেবেলায় বাবার সাহচর্যে মুক্তিযুদ্ধসহ সাহিত্য বিষয়ক বিভিন্ন বই-পুস্তক পড়ায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বিষয়ভিত্তিক তথ্য সংকলন ও তা পর্যালােচনার মাধ্যমে যুক্তিনির্ভর সাবলীল লেখার জন্য অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যমগুলােতে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন এর মধ্যেই। মুক্তমনা ব্লগ থেকে লেখালেখির শুরু করে এখন নিয়মিত লিখে চলেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় বেশকটি পত্র-পত্রিকায়।