যে কোনো তত্ত্বের চেয়ে প্রেমানুভূতি দিয়ে মানুষে মানুষে ঐক্য গড়ে তোলা অধিকতর সহজ। খাঁটি প্রেমের অন্তর্নিহিত রূপ হল মানবিক গুণের উদ্ভাসন, যা মূলত ব্যক্তির বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সম্পর্কিত। শিল্প-সাহিত্যে এই বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি জীবন-ঘনিষ্ঠ নানাবিধ প্রপঞ্চকে উদ্ভাসিত করে, তুলে ধরে সমাজ ও সংস্কৃতির ইতিবাচক দিক। পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় সবকিছুই বিনিময়যোগ্য। এই সমাজকাঠামোয় আর্থিক সাফল্যই একজন মানুষের সমস্ত জীবনের সার্থকতার নির্ণায়ক। ফলে মানুষে মানুষে বৈষম্য বাড়ে, প্রত্যেকেই একই সমাজে বসবাস করেও একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, প্রকৃতি ও পরিবেশ থেকেও ঘটে মানুষের বিচ্ছিন্নতা। শিল্প-সাহিত্য সমাজ ও রাষ্ট্রের নিষ্ঠুরতা এবং অন্তঃসারশূন্যতাকে উন্মোচিত করে গড়ে তুলতে পারে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ, ছড়িয়ে দিতে পারে জীবনের বৈচিত্রময় প্রভা মানুষের কল্যাণে। কবিতা উপলব্ধির জগৎ; আর উপলব্ধি হল বুদ্ধি, আবেগ, অভিজ্ঞতা ও জীবনদৃষ্টির সমষ্টি। কবিতায় থাকে জীবনের গভীর তাৎপর্য, স্বপ্ন ও বাস্তবের সম্মিলন। কবিতা ফুলের বনে মৃদু সমিরন, আবার বজ্রবিদ্যুতের তীক্ষ্ণ গর্জন। কবির কল্পনা, একটি মহৎ সৃষ্টি হৃদয়ের অনুভবে মানুষের মনকে উদ্ধিপ্ত ও সংবেদনশীল করে তোলে। সমাজ-সভ্যতার ক্ষয়িষ্ণু চিত্র ধরিয়ে দেন কবি ও লেখকরা, হাজির করেন সার্থক রূপকল্প। -হানিফ রাশেদীন
হানিফ রাশেদীন, কবি ও কথাসাহিত্যিক। জন্ম ১৫ অক্টোবর ১৯৮৬, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ঢাপকাঠী গ্রামে। পিতা মো. রুস্তুম আলী ফরাজী, মা সৈয়দা ফরিদা বেগম। দ্রোহ ও প্রেমকে একীভূত করার একটি প্রয়াস লক্ষণীয় হানিফ রাশেদীনের কবিতায়। একদিকে কবির অন্তর্জগৎ অপরদিকে বাইরের নিষ্ঠুর পৃথিবী। জীবনের নগ্নতা আর তিক্ততার যন্ত্রণা হতে তার কবিতা পাঠককে আন্দোলিত করে সৌন্দর্য ও মানবিক চৈতন্যে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ নিকাশের দায় রেখে (২০১২)। সম্পদনা করছেন সাহিত্য শিল্পের ম্যাগাজিন প্রতিকথা।