ফ্ল্যাপে লেখা আছে মিথের শুরু হয়েছে সৃষ্টির প্রথম নারীর হাত ধরে। নিঃসঙ্গ সেই নারীর কান্না থেকে নাক দিয়ে যে সর্দি বেরিয়ে আসে, তাই ঝিনুকের খােলায় বড় হয়ে উৎপত্তি হয় দ্বীপের প্রথম পুরুষের। তাদের সঙ্গমেই জন্মায় তাম্রপ্রভা নারীর প্রথম কন্যা সন্তানমােওয়িটা। তাদের থেকেই আরও আরও নারী পুরুষ জন্ম নিয়ে এই দ্বীপপুঞ্জে পত্তন ঘটে এক নতুন মাতৃতান্ত্রিক নারী-প্রধান সভ্যতার । এই উপকথার দ্বীপ-সমাজ একদিকে যেমন মাতৃ-তান্ত্রিক, সমাজে নারীর ভূমিকা এবং স্বাধীনতাকে যেমন গুরুত্ব দেয়, তেমনি এই সমাজ সমবায় সমাজ। তাদের নিজস্ব সংস্কার ছিল, প্রথা ছিল, ছিল নিজস্ব জ্ঞান-বিজ্ঞান। তারা সমুদ্রের স্রোত চিনত, নৌকায় দূর দূরান্তে যাওয়ার জন্যে দিক, দূরত্ব ও অবস্থান নির্ণয়ের নিজস্ব পদ্ধতি ছিল, ছিল নিজস্ব চিকিৎসা ব্যবস্থা। কিন্তু স্বাধীন ও স্বয়ংসম্পূর্ণ এই সমাজে নারীদেহ এবং সােনার লােভে বহিরাগত নাবিকেরা ক্রমাগত অত্যাচার চালিয়েছে। তাদের সভ্য করার তাগিদে দেওয়া হয়েছে মিশনারি শিক্ষা, প্রােথিত করা হয়েছে নব-প্রজন্মের মনে যাবতীয় ভেদাভেদ । এই ভাবে প্রাচীন এক সমাজ-সভ্যতা সময়ের সাথে পরিণত হয়েছে এক উপকথায়, এক কল্পকথায়।