প্রচ্ছদ থেকে নেওয়া মানুষের জীবন শুধু অগণন সময়ের সমষ্টিই নয়, এতে রয়েছে নানাবিধ অভিজ্ঞতা, স্মৃতিকাতরতা কিংবা বাস্তবতার মিশেল। সহস্র ঘটনা-রটনা ও যাতনা আমাদের ঋদ্ধ করে দগ্ধ করে। জীবনের দুরন্ত রেসে শৈশব, কৈশাের এবং যৌবন পেরিয়ে একসময় বয়ােবৃদ্ধ হতে হয় এক অমােঘ নিয়ম। শুভ্র চুলের বৃদ্ধরা স্মৃতিকাতর হয়। কালাে কেশের শিশু-কিশােরেরা স্বপ্ন দেখে। তাই বয়স্করা ফুরসত পেলেই অতীতে ফিরে যায়। কিচ্ছার ঝুড়ি মেলে দেয়। এভাবে তৈরি হয় প্রজন্মের মেলবন্ধন। দাদা-দাদির ঝুলি থেকে গল্পের আসর বঙ্গদেশে হাজার বছরের ঐতিহ্য। এমনই একটি গল্পের আসরে ‘ভয়ঙ্কর রাতের গল্প' বইটির গােড়াপত্তন। রাফিদ, আবিদ ও সুমাইয়া শীতকালীন স্কুল ছুটিতে দাদাবাড়ি বেড়াতে গেলে তাদের অনুরােধে দাদা মি. আলী। জীবন থেকে নেয়া একটি আধিভৌতিক গপ্পো শােনানাের প্রয়াস পান। সাথে যােগ হয় আরও দু’জন কাজিন সাব্বির ও টুম্পা। তাদের জিজ্ঞাসু মনের বিভিন্ন প্রশ্নে দাদার কাছে পাওয়া যায় জিন-ভূত সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক ও ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা ‘ভয়ঙ্কর রাতের গল্প’ গাল্পিক, ছড়াকার ও শিশু সংগঠক আজাদ আশরাফ’র ২য় গ্রন্থ হলেও কিশাের উপন্যাস হিসেবে ১ম । অত্যন্ত সাবলীলভাবে চট্টগ্রাম নগরের একটি উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের কিশােরদের যাপিত জীবন, খুনসুটি ও মনস্তত্ত্ব তুলে ধরেছেন তিনি। হয়তাে একজন শিশু সংগঠক বলেই এ দূরূহ কর্মযজ্ঞটি তিনি সহজেই সম্পন্ন করতে পেরেছেন। বলা বাহুল্য, তাদের পারিবারিক আবহে ধর্মীয় ঐতিহ্য ও অনুশাসনের সরব উপস্থিতি এ কিশাের উপন্যাসকে নিঃসন্দেহে ভিন্ন মাত্রায় অধিষ্ঠিত করেছে। আমি লেখক ও বই উভয়ের প্রশংসা করি।