বাম ঘেঁষা পােপ ফ্রান্সিস মায়ানমারে গিয়ে নির্যাতিত ধর্ষিতা রােহিঙ্গাদের জাতিগত নামে সম্বােধন করতে পারেন নি। কারণ মায়ানমারের সামরিক জান্তা অসন্তুষ্ট হতে পারত। কেউ বলে আরাকান, কেউ রাখাইন, কেউ রােহিঙ্গা, কেউবা বলে মুসলিম। মানুষ হিসেবে তাদের নির্যাতন কিংবা ধর্ষণকে চিহ্নিত করা যায় নি। মায়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা ধর্মীয় কারণে ধর্ষণ করছে রােহিঙ্গা মুসলিমদের। একসময় রামুতে বৌদ্ধদের ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল কিছু মুসলিম ধর্মের নাম ব্যবহার করে। কিন্তু এসব ঘটনার পেছনে যারা কাজ করে তারা কি ধার্মিক ? নাকি ধর্মকে ব্যবহার করে ? কোনাে ধর্ম মানুষকে ঘৃণা শেখায় না। শেখায় না কারও ক্ষতি করতে। ধর্ম শান্তির মানুষকে ভালােবাসতে শেখায়। অথচ ধর্মের নামে ঘৃণা-বিদ্বেষ উসকে দিয়ে কিছু মানুষ নােংরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ করে। এই জন্যই মায়ানমারের গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সুচি শান্তিতে নােবেল প্রাইজ পাওয়ার পরও সামরিক জান্তার বর্বরতাকে প্রশ্রয় দেয় শুধু রাজনৈতিক কারণে। অর্থনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য। আসামের চা-বাগানের হিন্দু সাঁওতাল মেয়েটি ধর্মের নামে নির্যাতিত হওয়ার পর পালাল সুদূর আমেরিকায়। মানুষটা একই থাকল। নীতি-মনুষ্যত্ব—সব একই। খ্রিষ্টান হওয়ার জন্য শুধু বদলাল নামটা। তবু বাঁচতে পারল না মানুষ থেকে যারা পশু হয়ে যায় সেসব ধর্মব্যবসায়ীদের হাত থেকে। একই মানুষটা হয়ে গেল বৌদ্ধ। এল রামুতে এবারও বাচল না নির্যাতনের হাত থেকে। সেই ধর্মব্যবসায়ীরা! রােহিঙ্গার বউ হয়ে গেল রাখাইনে। সেই একই গল্প। এবার ধর্মকে ব্যবহার করল মায়ানমারের সামরিক জান্তা। একটি চমৎকার ঐতিহাসিক গল্প—যা ফুটিয়ে তুলেছে এই পুঁজিবাদী সমাজে দুর্বলেরা সবসময় নির্যাতিত হবে ধর্মের নামে—কারণ পৃথিবীর সবজায়গাতেই আছে পশু!