“নিজেকে যদি সংজ্ঞায়িত করতে চাই, আমাকে শুরুতেই বলতে হয়- আমি একজন নারী। বাদবাকি কথা এ সত্যকে ঘিরেই। পুরুষের নিজেকে প্রথমেই পুরুষ বলার দায় নেই।” সিমোন দ্য বোভোয়ারের এই উক্তিটি বলে দেয় ক্রমশ ‘নারী’ হয়ে ওঠা একজন মানুষের পক্ষে ‘মানুষ’ হয়ে ওঠা কতটা কঠিন। সাক্ষাৎকার সংকলন ‘আলাপের অ্যাম্ফিথিয়েটারে’র সংকলক ও সম্পাদক ইশরাত তানিয়া। লিঙ্গ পরিচয়ে তিনি একজন নারী বলেই জন্মাবধি প্রতিবন্ধকতা নিয়ে নারী কিভাবে পুরুষশাসিত সমাজে এগিয়ে চলে সেটা জেনেছেন নিত্যদিনের উপলব্ধিজাত অভিজ্ঞতায়। ফলতঃ উপমহাদেশের এই সময়ের দশ অগ্রগণ্য নারী কথাসাহিত্যিকের সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে তিনি এঁকেছেন তাঁদের ঘর-বাহির, সমাজ ও সাহিত্য জীবনে ঠোক্কর খেতে খেতে মাথা তুলে দাঁড়ানোর, প্রতিষ্ঠার কাহিনী। তাঁদের দ্বিতীয় বা আধেক নয় এক সম্পূর্ণ আকাশ হয়ে ওঠার ফলিত সৃজন-রসায়ন। সময়ের প্রেক্ষিতে যা এক আবশ্যিক অক্ষর দলিল। আগামীর বাংলা সাহিত্যকে যা ঋদ্ধতা দেবে। বিস্তীর্ণ ক্যানভ্যাসে আঁকবে সমানাধিকারের রক্তিমাভাময় ভোর। ‘আলাপের অ্যাম্ফিথিয়েটারে’র পাতা ওলটালে পাওয়া যাবে উপেক্ষার কুহকী আস্তরণ সরানো প্রতিস্পর্ধার সেই বারুদ গন্ধ, সাম্যের প্রত্যাশা। যা ছাড়া যে কোনো সমাজ-সাহিত্য আংশিক।
ইশরাত তানিয়া। মূলত গল্পকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে পিএইচডি করেছেন। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযােগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। মানবিক সম্পর্ক, নৈরাশ্য, স্বপ্ন, প্রকৃতি, অতীন্দ্রিয়তা, সমাজ ও রাজনীতি বিষয়ে উপলব্ধি এবং ভাবনাকে কেন্দ্র করে তাঁর সাহিত্য কর্ম আবর্তিত। জন্ম: ৬ নভেম্বর ১৯৮০, ঢাকা। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: নেমেছ ইচ্ছে নিরিবিলি (২০১৬) গল্পবই: বীজপুরুষ (২০১৮) সম্পাদনা: আলাপের অ্যাম্ফিথিয়েটারে (২০২০)। ‘কালি’ সাহিত্য ও সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত।