"নোনা জলের কান্না" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইলের ছােট্ট এ ভূখন্ডের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিনিয়ত আঘাত হানে সিডর, ফণি, নার্গিস নামক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়। তেমনই একটা ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’ আঘাত হানে ২৫ মে ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার দক্ষিণের উপকূলীয় উপজেলা কয়রা, দাকোপ, আশাশুনি ও শ্যামনগরে ফলে একদিকে যেমন ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম অপরদিকে ওয়াপদা ভেঙে নােনা জলে পাবিত হয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা। লেখক নােনা জলের কান্না উপন্যাসটির পটভূমি হিসেবে কয়রা উপজেলার বেদকাশী ইউনিয়নের বেদকাশী গ্রামকে বেছে নিয়েছেন। যদিও উপন্যাসটিতে একটি পরিবার ও তার আশপাশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা বর্ণিত হয়েছে করুণভাবে। তবে বৃহৎপরিসরে বলতে গেলে বলতে হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়া প্রতিটি পরিবারের প্রতিটি মানুষের কথাই উঠে এসেছে নিদারুনভাবে। ঘূর্ণিঝড় কিংবা বন্যায় সুস্থ্য স্বাভাবিক জীবন যাপন প্রনালী কীভাবে এক নিমেষেই তছনছ হয়ে যায়, সম্পদশালী মানুষ কীভাবে রিক্ত নিঃস্ব হয়ে যায় এক মুহুর্তের মধ্যে তারপর সে পরিস্থিতিতে টিকে থাকার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা এবং সময়ের সাথে সাথে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানাের কথা উপন্যাসের পরতে পরতে পরিলক্ষিত হয়। উপন্যাসটিতে লেখক তুলে ধরেছেন বন্যা পরবর্তী মানুষের টিকে থাকার সংগ্রামের করুণ কাহিনী। একটি পরিবারের অসহায় অবস্থা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কাহিনী। লিটন নামক তরুনের নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে সংসারের হাল ধরার আকুতি, অসহায় বাবার সংসার সামলানাের গােপন চেষ্টা কিংবা মায়ের শূন্যদৃষ্টি আর বুকভরা দীর্ঘশ্বাস। উপন্যাসের শেষ অব্দি পড়ে এতটুকু বলতে পারি, পাঠকের মনে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত প্রিয়হারা অসহায় মানুষের কষ্টের সংগ্রামের কাহিনী নতুনভাবে ভেবে দেখার অনুপ্রেরণা যােগাবে বইটি। যেটির প্রতি লেখক দৃষ্টিপাত করেছেন।
মিনার মেহেদী- কুলকুল রবে বয়ে চলা কপোতাক্ষ নদের তীরে গড়ে ওঠা সবুজ শ্যামলিমায় ঘেরা লোকা নামক ছোট্ট একটা গ্রামে তাঁর মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মোঃ মজিবর রহমান ও মাতা নাজমুন নাহার। তিনি খুলনার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি ব্রজলাল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানে কৃতিত্বের সাথে বিএসসি সম্মান ও এমএসসি ডিগ্রী লাভ করেন। একাডেমিক লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে শুরু করেন। পড়তে পড়তে এক সময় লেখালেখির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।ছোটগল্প দিয়ে লেখার হাতেখড়ি হলেও তিনি উপন্যাস লেখার প্রতি ঝুঁকে পড়েন। তারপর তিনি একানাগাড়ে কয়েকটি উপন্যাস লিখে ফেলেন।কিন্তু মজার ব্যাপার হল তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থটি হল একটি গল্পগ্রন্থ। নাম কেন "মেঘ আসে জীবনে"। যেটি প্রকাশিত হয় ২০১৮ র অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। তারপর ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস "কেন হঠাৎ তুম"। এটি একটি রোমান্টিক উপন্যাস। তাঁর সর্বশেষ প্রকাশিত উপন্যাস " নোনা জলের কান্না। এটি উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের জীবন কাহিনি নিয়ে রচিত।