কবি ক্যাপ্টেন জহির উদ্দিন এর “চোখের জলে কথা বলে” কাব্যগ্রন্থের গ্রন্থালোচনার ভার পেয়ে আমি রীতিমতো ভাবনায় পড়ে গেলাম কোথা থেকে কিভাবে শুরু করবো ভেবেই পাচ্ছি না। কারণ তিনি এমন একজন লেখক যার জীবনে মুহূর্ত গুলো বিভিন্ন আবিরে রাঙানো ছিল বিধায় তার জীবনের সেই সব বাস্তব অভিজ্ঞতাকে অত্যন্ত সুন্দর ও সাবলীল চয়নে কাব্যিক রূপ দিয়েছেন। তিনি একাধারে মুক্তিযোদ্ধা, নাবিক ও একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন বিধায় তাঁকে প্রায়শই বিদেশ ভ্রমণ করতে হতো তাই তিনি আকাশচারী এবং পরিব্রাজক ছিলেন বিধায় তাঁর কাব্যে বাস্তবতার ছোঁয়ার সাথে সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া ও স্পষ্ট বিদ্যমান। সবচেয়ে বড় যে ব্যাপার টি আমাকে আকর্ষণ করেছে তা হলো তার সহজ সাবলীল অথচ ঋদ্ধ কাব্যিক উপস্থাপন। তাঁর লেখা সহজেই পাঠক হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারবে এ আমার অনুমান নয় বিশ্বাস। আর যে লেখা পাঠক হৃদয় আন্দোলিত করতে পারে সে লেখাইতো স্বার্থক। কয়েকটা উপমা দিয়ে ব্যাপার টা পরিস্কার করতে চাই- তিনি মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে বলেন- "এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে নিয়েছি রক্তে রঞ্জিত লাল সবুজের পতাকা ধারী বাংলার মানচিত্র" হাজারো বার শোনা এই কথাগুলোই বলে দেয় দেশের প্রতি কবির কমিটমেন্ট। তিনি তার দাম্পত্য জীবনের কথা বলতে গিয়ে বলেন "একফালি সুখ কলকাকলীতে মুখর উদ্যান ঝর্ণার মতো বহমান" দাম্পত্য জীবনের প্রশান্তি প্রকাশে এর চেয়ে ভালো চয়ন হতে পারে কিনা আমার জানা নেই, আবার পতœী বিয়োগের দুঃখ প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন-"পৃথিবী যেন বিষাদের অন্ধকারে ছেয়ে গেছে" কত সাবলীল ও সমৃদ্ধ চয়ন বুঝাই যায়। তিনি নাবিক ছিলেন বিধায় নাবিক জীবন নিয়ে লিখতে গিয়ে বলেন- "ঢেউয়ের তরঙ্গে তরঙ্গে যেন হাসি ঝরে মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে থাকি ঢেউয়ের দিকে" এ যে সমুদ্রের অতি পরিচিত মুগ্ধকর আকর্ষণীয় রূপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি যখন কবিদের সম্পর্কে বলতে যান তখন মানুষ ও মানবিকতা কে কবিতার উপজীব্যতা করে তুলে বলেন- "ক্ষুধাতুর মানুষের করুণ আর্তনাদের কথা বুভুক্ষ মানুষের হাহাকার