”ফ্রিল্যান্সার সুমনের দিনরাত” বইয়ের কাহিনী সংক্ষেপ: নরসিংদীর আলীনগর গ্রামে ছোট্ট একটা মিষ্টির দোকান ছিল সুমনের বাবার। কত লোক আসত সেই দোকানে! সুখবরের সঙ্গে মিষ্টির যে একটা সুসম্পর্ক আছে—সেটা সুমন সেই সময় থেকেই খুব কাছ থেকে দেখেছেন। কিন্তু বন্ধু–স্বজনদের ডেকে মিষ্টি খাওয়ানোর মতো সুদিন তাঁর জীবনে এসেছে কদাচিৎ। বাড়িতে অর্থনৈতিক টানাপোড়েন ছিল। কম্পিউটার বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন, কিন্তু একটা কম্পিউটার কেনার মতো সামর্থ্য তাঁর ছিল না। ফ্রিল্যান্সিং করে এই তরুণের মাসিক আয় এখন সাড়ে ৫ লাখ টাকার বেশি! জীবনে অনেক সংগ্রাম করেছেন। এখন নরসিংদীর সুমনের গল্প নিশ্চয়ই সারা দেশের মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা রাহিতুল ইসলামের উপন্যাস—ফ্রিল্যান্সার সুমনের দিনরাত। আসছে ২০২০ সালের বইমেলায়। কীভাবে গড়বেন ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার ‘কীভাবে গড়বেন ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার’ বইটি লেখার উদ্দেশ্য একটাই—যাঁরা এই পেশায় নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়তে চান, তাদের পাশে দাঁড়ানো। আমাদের দেশের লাখ লাখ তরুণ–তরুণী এখনো বেকার। প্রথম আলোতে আমি যখনই একেকজন সফল ফ্রিল্যান্সারের গল্প লিখি—হাজারো ফোন, ইমেইল, ইনবক্সে ম্যাসেজ আসা শুরু হয়। সবার মূল কথা একটাই—ভাই আমিও ফ্রিল্যান্সার হব। কীভাবে কী করব? আমি কী পারবো? কোথায় যাব? সঠিক গাইড লাইন কোথায় পেতে পারি? এমন প্রশ্নের সম্মূখিন হতে হয় সব সময়। ছোট্ট একটা ঘটনার কথা বলি। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস। মিরপুরের মেয়ে সালমা (ছদ্মনাম)। তিনি পত্রিকায় একজন সফল নারী ফ্রিল্যান্সারের কথা পড়েছেন।পড়ে তিনিও এই পেশার প্রতি আগ্রহী হয়েছেন। সালমার বাবা একজন মুদি দোকানদার। বাবাকে বললে হয়তো বকা দিবে। সেজন্য নিজেই খুঁজতে শুরু করেন, কোথায় শেখা যায়। মিরপুরের ব্যানারশি পল্লির দেয়ালে লাগানো একটি কাগজ তাঁর চোখে পড়ে। লেখা—এখানে ফ্রিল্যান্সিং শেখানো হয়। যোগাযোগের ঠিকানা ফার্মগেট। সালমা ফোন করে বিস্তারিত জেনে নেন। শিখতে লাগবে ২০ হাজার টাকা। সালমা তাঁর মায়ের দেয়া কানের দুল বেচে সেই টাকা জোগাড় করেন, ভর্তি হন। তারপর দুই মাসে সালমা কিছুই শিখতে পারেননি। তবে কষ্ট পেয়েছেন খুব। কারন মায়ের দেওয়া দুল বেচে তিনি ফ্রিল্যান্সিং পেশায় সফল হতে চেয়েছিলো। এমন গল্প আছে আরও অসংখ্য। সালমার মতো আরও অনেক তরুণ–তরুণী সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে পথ হারিয়ে ফেলেন। এই বইটির উদ্দেশ্যই হলো, একটি গাইড লাইন দেওয়া। এই বইকে বলা যায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের অ–আ–ক–খ। যাতে যে কেউ এই বই পড়ে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে পারেন। কেমন আছে ফ্রিল্যান্সার নাদিয়া? কেমন আছে ফ্রিল্যান্সার নাদিয়া? আগামী ১৪ ফেব্রয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বই মেলায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে রাহিতুল ইসলামের তৃতীয় উপন্যাস, ‘কেমন আছে ফ্রিল্যান্সার নাদিয়া’। কুমিলা মফস্বল শহরের সাধারণ এক মেয়েকে নিয়ে এই গল্প। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর বিয়ে হয়ে যায় নাদিয়ার। শশুর বাড়িতে গিয়ে সে মুখোমুখি হয় দারুণ প্রতিকূল এক পরিস্থিতির। কিন্তু এসবে দমে যায় না নাদিয়া। নিজের মতো করেই পরিকল্পনা সাজায়। তার স্বাবলম্বি হওয়ার গল্প হলো এ উপন্যাস। সফলতা পথ সহজ নয়। নাদিয়াকে নানা বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। ঘরে ও বাইরের সেসব বাধা কীভাবে কাটিয়ে ওঠে নাদিয়া? নাদিয়ার মতো মেয়েরা সুযোগ পেলে অনেক কিছু করতে পারে। উপন্যাসে তাই দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আবহমান বাঙালি নারীর বৈশ্যিষ্টে এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র নাদিয়া উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী ঘটতে যাচ্ছে নাদিয়ার জীবনে? সাধারণ একজন অল্প বয়সী নারী ফ্রিল্যান্সিং পেশা বেছে নেওয়ার পর কীভাবে অসাধারণ হয়ে ওঠে, এটা তারই গল্প। জীবনযুদ্ধে হার মানতে না চাওয়া এক প্রবল নারীর নাম নাদিয়া। নাদিয়া এক অনুপ্রেরণার নাম। উপন্যাসটি বের করছে অদম্য প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন নিয়াজ চৌধুরী তুলি। দাম ২০০ টাকা। উপন্যাসটি ইতিবাচক মনোভাবের চমৎকার উদাহরণ হতে পারে। আউটসোর্সিং ও ভালোবাসার গল্প ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে নিয়ে অনেক তরুণই নিজের ভাগ্য বদলেছেন, কিন্তু এ পেশার সামাজিক স্বীকৃতি নেই এখনও। সেরকম এক তরুণের গল্প নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে রাহিতুল ইসলামের উপন্যাস ‘আউটসোর্সিং ও ভালবাসার গল্প’।
প্রথাগত চাকরির পেছনে না ছুটে স্বাবলম্বী হওয়ার কাহিনি উঠে এসেছে এই উপন্যাসে। তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক সাংবাদিক হিসেবে লেখক খুব কাছ থেকে এই পেশার চ্যালেঞ্জগুলো দেখেছেন। এই পেশার প্রতিকূলতা, সুযোগ, উদ্যোক্তা হওয়ার গল্পের সঙ্গে মানবিক প্রেমের আখ্যান মিলিয়ে এটি একটি অনবদ্য রচনা।
প্রধানত এই পেশার সামাজিক স্বীকৃতি নিয়েই আবর্তিত হয়েছে এর গল্প। শুন্য থেকে শুরু করা এক তরুণ কীভাবে এ পেশার আদর্শ হয়ে ওঠে, সেই দৃশ্যই আঁকেন লেখক। গল্পের নায়ক মাহাবুবের জীবন-সংগ্রামের পাশাপাশি তাঁর প্রেমের এক অন্তরঙ্গ বয়ান এ উপন্যাস। সরকারি, বেসরকারি যেকোনো চাকরির চেয়ে আউটসোর্সিং পেশা হিসেবে ভালো। নিজের অনেকটা স্বাধীনতা রয়েছে। উপন্যাসটি কোনো কাল্পনিক গল্প নয়। এটি মাহাবুব নামের একজন ফ্রিল্যান্সারের জীবন থেকে নেওয়া।
আউটসোর্সিং বাংলাদেশে এখনও নতুন। যদিও এ পেশার ইতিহাস মোটামুটি এক দশকের। সম্পদের তুলনায় এ দেশের জনসংখ্যা বেশি। স্বাভাবিক ভাবেই তাই বাড়তি জনসংখ্যার বোঝা বইতে হচ্ছে দেশটিকে। আর জনসংখ্যাকে জনসম্পদের রূপান্তরিত করার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে, তা যথেষ্ট নয়। তাই আমাদের তরুণেরা নিজেরাই এগিয়ে আসছেন নিজেদের ভাগ্য বদল করতে। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই এখন চাকরি নামক সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে ঘরে বসেই করছেন নিজেদের আয়ের ব্যবস্থা। ফ্রিল্যান্সিং পেশাটি তাই আজ বদলে দিচ্ছে বাংলাদেশের অনেক তরুনের ভাগ্য। বিদেশ থেকে রেমিটেন্স এনে তাঁরা দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করছেন। একই সঙ্গে সরকারের ওপর থেকেও বেকার সমস্যার চাপ কমছে।
এ পেশায় দক্ষতা থাকলেই ভালো করা যায়। একটু দক্ষ হলেই একটি কম্পিউটার আর ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই যে কেউ শুরু করে দিতে পারেন আউটসোর্সিংয়ের কাজ।
রাহিতুল ইসলামের উপন্যাসের নায়ক ও নায়িকার শেষ পরিণতি কী হবে? নায়িকার পরিবার কি একজন ফ্রিল্যান্সারের হাতে মেয়েকে তুলে দেবে? নাকি সমাজের চাপে পেশা বদল করতে হবে মাহাবুবকে? অথবা সব ছাপিয়ে জয় হবে প্রেমের, ভালোবাসার...?
Title
ফ্রিল্যান্স ও আউটসোর্সিং নিয়ে রাহিতুল ইসলামের সেরা ৪টি বইয়ের কালেকশন
রাহিতুল ইসলাম (Rahitul Islam) একজন বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি সাংবাদিক, লেখক ও নাট্যকার। বর্তমানে দেশের একটি শীর্ষ দৈনিকে সাংবাদিকতা করছেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাহিত্যচর্চাও করেন। তবে তাঁর আগ্রহের বিষয় মূলত তথ্যপ্রযুক্তি। সংবাদপত্রে লিখে আর কথাসাহিত্য রচনার মধ্য দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন পাঠকদের এই জগতের জানা-অজানা নানা বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত করাতে। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১২। উল্লেখযোগ্য উপন্যাস: ‘কল সেন্টারের অপরাজিতা’, ‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’, ‘হ্যালো ডাক্তার আপা’, ‘ভালোবাসার হাট-বাজার’ এবং ‘কেমন আছে ফ্রিল্যান্সার নাদিয়া’। ‘আউটসোর্সিং ও ভালোবাসার গল্প’ বইটি ফিলিপাইন থেকে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘আউটসোর্সিং ও ভালোবাসার গল্প’ বইয়ের জন্য জাতীয় ফ্রিল্যান্সিং অ্যাওয়ার্ড (২০১৯) এবং ‘কল সেন্টারের অপরাজিতা’র জন্য এসবিএসপি সাহিত্য পুরস্কার (২০২১) পেয়েছেন।