প্রকৃতি আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। মানবজীবনে প্রকৃতির অবদান অনস্বীকার্য। একটি বৃক্ষ তার জীবনে অসংখ্য মানুষকে অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে। একজন ৬৫ বছর জীবনপ্রাপ্ত মানুষ তার জীবনে ৫ কোটি টাকার বেশি মূল্যের অক্সিজেন গ্রহণ করে! তাহলে অসংখ্যা বৃক্ষ-তরুলতা দৈনন্দিন আমাদের কত হাজার কোটি টাকার অক্সিজেন বিনামূল্যে বিনা স্বার্থে বিতরণ করে তা কল্পনারও বাইরে। এ-তো গেলো অক্সিজেনের হিসাব। এছাড়া প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি আরও নানাবিধ উপকার আমরা প্রকৃতি থেকে পাই। অথচ মানুষ সেই প্রকৃতিকে ধ্বংস করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করে না। লক্ষ লক্ষ বৃক্ষ নিধন করে বনভূমি উজার করছে। এতে উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়, অসময়ে ঋতু পরিবর্তন হয়। এর প্রভাবেই বিরূপ আচরণ করে প্রকৃতি। কখনো খরা, কখনো বন্যা আবার কখনো ঘূর্ণিঝড়, হ্যারিকেন, টাইফুন, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতির মাধ্যমে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেয় প্রকৃতি।
আমরা প্রকৃতি ধ্বংস না করে যদি এর সদ্ব্যবহার করতে পারি তাহলে প্রকৃতি যেমন রক্ষা পাবে তেমনি আমরাও সমানভাবে প্রকৃতি থেকে উপকৃত হবো। প্রকৃতি কাষ্ঠল বৃক্ষের পাশাপাশি নানা প্রজাতির ফলদ ও ঔষধি গাছ-গাছালিতে পূর্ণ। এসব ফল থেকে আমাদের দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদার সবটুকুই পূরণ করা সম্ভব। এছাড়া বিভিন্ন রোগবালাইয়ে ঔষধি গাছের বিবিধ ব্যবহার সর্বজনস্বীকৃত। মানুষের এমন কোনো রোগবালাই নেই যার চিকিৎসা প্রাকৃতিক উপায়ে করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে শুধু পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকাটা বাঞ্ছনীয়। লেখক বইটিতে বিভিন্ন রোগবালাইয়ে ঔষধি গাছের ব্যবহার, বিভিন্ন ফল-ফলাদির পুষ্টিগুণ, অসুখের হাত থেকে বেঁচে থাকার উপায় ইত্যাদি বিষয় সাবলীলভাবে উপস্থাপন করেছেন। যা যে কোনো শ্রেণীর পাঠকের কাছে সহজবোধ্য।
এ বইটি পড়ার ফলে আমরা জানতে পারবো— কীভাবে সুস্থ থাকা যায়, কীভাবে আমরা নিরোগ দেহ পেতে পারি, কীভাবে দীর্ঘায়ু লাভ করা যায়, কোন ফলে কী পুষ্টিগুণ, কোন শাকসবজিতে কী কী পুষ্টি উপাদান থাকে ইত্যাদি বিষয়। এছাড়া বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবারের ক্ষতিকর দিকগুলোও আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে। সর্বোপরি প্রায় সব ধরনের অসুখ-বিসুখের প্রথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে। এটি অধ্যয়নের ফলে একজন রোগী গুরুতর অসুস্থ না হলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। ঘরে বসে প্রাকৃতিক উপায়েই রোগের উপশম করা সম্ভব হবে।