নফস শব্দটিকে যত সহজ মনে হয়, এত সহজ নয়। মানুষের আভ্যন্তরীণ শত্রু হচ্ছে তার নফস, আর বহিঃশত্রু হচ্ছে শয়তান। শয়তান এবং নফসের যুগপৎ আক্রমণে মানুষ বিপথে যায়, বিপাকে পড়ে এবং বিফল হয়। আখেরাতের চিন্তা ছাড়া দুনিয়াতে যাদের সফল মনে করে হয়, তারা মূলত নফসেরই গোলামী করে। শয়তান এতে ইন্ধন যোগায়। ইসলামের এই দুই শত্রুকে যেভাবে চিহ্নিত করে, অন্য কোনো ইজম বা ধর্ম তা করে না। ইসলামই মানুষকে আখেরাতের সফলতার কথা বলে, সেখানে তাকে হিসেবের মুখোমুখি হতে হবে―সফল হলে জান্নাতের সুসংবাদ, আর বিফল হলে জাহান্নামের ভয় দেখায়। মূলত আখেরাতের সফলতাই আসল সফলতা। এজন্য নফস ও শয়তানের বিরুদ্ধে আত্মাকে লড়তে হয়। এ লড়াই প্রক্রিয়াই ইসলাহ। সুতরাং আত্মার ইসলাহ বা পরিশুদ্ধি একটি অতি প্রয়োজনীয় জিনিস। এ গ্রন্থে আত্মার সংশোধন এবং এর শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করার উপায়-উপকরণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ পাক-ভারত উপমহাদেশের অন্যতম খ্যাতিমান আলেম ও বুযুর্গ আল্লামা মুহাম্মাদ মুশাহিদ বায়মপুরি রহ. এ গ্রন্থটি রচনা করেছেন। তার জ্ঞান ও প্রজ্ঞার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত এই গ্রন্থটি। দীর্ঘদিন এটি এদেশের পাঠকের নিকট অপ্রকাশিত রয়ে গিয়েছিল। গ্রন্থটি কয়েকভাষায় লিপিবদ্ধ করায় যোগ্য অনুবাদকও পাওয়া যায়নি। পরিশেষে সময়ের এক কীর্তিমান তরুন অনুবাদক কাজটি হাতে নিয়েছেন। তারই ফলশ্রুতিতে গ্রন্থটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে। যারা ইসলাহের গুরুত্ব বোঝেন, তাদের জন্য এ গ্রন্থটি এক অমূল্য সম্পদ, আর যারা নতুন করে জানতে চান, তাদের জন্য এতে রয়েছে অনিঃশেষ আত্মার খেরাক। আশা করি, পাঠকগণ এ গ্রন্থটি দ্বারা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন।