‘পুণ্যধাম গয়া’ বই এর ফ্ল্যাপের লেখা মৃত ব্যক্তির আত্মার উদ্দেশে গয়ায় পিণ্ডদানের বিকল্প আর কিছু নয়, এমনটাই বিশ্বাস করেন হিন্দুরা। তাই সারা বছর ধরে পিণ্ডদানের ব্যস্ততা এখানে । শুধু হিন্দুরাই নন, কোনও কোনও ধর্মের মানুষরাও গয়ায় পিণ্ডদান করে অপার শান্তিলাভ করেন। স্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে প্রধানত তিন জায়গায় পিণ্ডদানের কথা শাস্ত্রে বলা হয়েছে। প্রথমেই ফল্গুতীর্থ, তারপর শ্রীবিষ্ণুপাদপদ্ম মন্দির,সবশেষে অক্ষয়বট। আবার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে এই তিন জায়গার সঙ্গে সঙ্গে প্রেতশিলায় গিয়েও পিণ্ডদান করতে হয়। সর্বসাধারণের বিশ্বাস গয়ায় ত্রেতাযুগ থেকে পিণ্ডদানের ক্রিয়াকর্ম শুরু হয়েছে। এই পিণ্ডদানের পাশাপাশি পিতৃকুল ও মাতৃকুলের পারলৌকিক কাজ এখানে করতে পারলে সেইসব আত্মার স্থান হয় ব্রহ্মলোকে। পিতৃপক্ষের পনেরো দিন পিতৃপূজা ও তর্পণ গয়ার আরও একটি বৈশিষ্ট্য। গয়ার কিছু দূরে ভগবান বুদ্ধের দিব্যজ্ঞানলাভের স্থান বুদ্ধগয়া ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের মর্যাদালাভ করেছে। পুণ্যধাম গয়া। পিণ্ডক্ষেত্র হিসাবে গয়ার প্রসিদ্ধি সমস্ত জগৎ জুড়ে। হিন্দুজাতি বিদেহী আত্মার মুক্তিলাভের জন্য গয়ায় পিণ্ডদান করে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন গয়ায় নিয়মনিষ্ঠা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পিণ্ডদানের ক্রিয়াকর্ম সু-সম্পন্ন করতে পারলে সমস্ত জাগতিক মায়া-বন্ধন থেকে অতৃপ্ত আত্মার মুক্তি ঘটে। যাঁরা পিণ্ডদান করতে আসেন, এই গ্রন্থে এরকম বহু মানুষের বয়ানে উঠে এসেছে তাঁদের আত্মীয়-পরিজনের মৃত্যুর অশ্রুসজল কাহিনি ।