বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থের প্রণেতা মুহাম্মাদ রশিদ রেযা, সম্পাদক: আল-মানার ম্যাগাজিন, এর কাছে শায়খ মুহাম্মাদ বিসসিউনি আবেদন করলেন যে, আল-আমির শাকিব আরসালান এর নিকট যেন মুসলিমদের পিছিয়ে পড়ার কারণ সম্পর্কে কতিপয় প্রশ্নের উত্তর চেয়ে পত্র পাঠালেন। আর উক্তসব প্রশ্নের উত্তরই এই মূল্যবান গ্রন্থটির বহি:প্রকাশের মূল কারণ। আল-আমির শাকিব আরসালান প্রাচ্যে ও পাশ্চাত্যে মুসলিমদের পিছিয়ে পড়ার কারণ সম্পর্কে বিষদভাবে উত্তর দিয়েছেন। ধর্মীয় ও পার্থিব উভয় দৃষ্টিকোণ থেকে মুসলিমদের পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। মুসলিমদের পিছিয়ে পড়ার মূল কারণ হল, প্রথমত: অতীত চিন্তাধারার ওপর অটল থাকা। দ্বিতীয়ত: অস্বীকার করা। অতীতের উপর অটল থাকা ব্যক্তিরা পুরাতন কোনো কিছু পরিবর্তন করতে চায় না। আর অস্বীকারকারীরা অতীতের কোনো কিছুকে মানতে চায় না। ইসলাম ও মুসলিমদের জন্য কোনটা উপকার ও কোনটা ক্ষতিকর সেদিকে তারা দৃষ্টিপাত করে না। আর অতীতে বিদ্যমান থাকা ব্যক্তিরা ইসলামী শিক্ষার মূলনীতির বাইরে যেতে চায় না। তারা ভাবে, আধুনিক জ্ঞানে বিধর্মীদের অনুসরণ করা কুফরি। কারণ, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা বিধর্মীদের দ্বারা প্রবর্তিত। এখানে লেখক উভয় দলের মাঝে পার্থক্য করেছেন। অস্বীকারকারীরা নিজেদের অস্তিত্বকে অন্যদের মাঝে বিলীন করে দিতে চায়। আর অতীতে বিদ্যমান থাকা ব্যক্তিরাও এদের চেয়ে কম ক্ষতিকারক নয়। অত:পর তিনি বলেন, মুসলিমদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলা হল মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। আর পিছিয়ে পড়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, অজ্ঞতা, ত্রুটিপূর্ণ জ্ঞান, চরিত্র নষ্ট হয়ে যাওয়া, শাসকদের চরিত্র নষ্ট হওয়া, দুর্বলতা ও কাপুরুষতা স্পর্শ করা, নৈরাশ হওয়া, অতীতে অটল থাকা, আত্মবিশ্বাস হারানো। উপসংহার টানেন এই বলে, মুসলিমদের করণীয় হল, তারা জেগে উঠবে, এগিয়ে যাবে, মান-মর্যাদার স্থানে নিজেদেরকে উপস্থাপন করবে, এবং অন্যরা যেভাবে বিভিন্ন জ্ঞান-বিজ্ঞানে এগিয়ে গেছে, তারাও এগিয়ে যাবে।