সবর ও শোকর: পথ ও পাথেয় লা-তাহযান, সুখময় জীবন উপভোগ করুন, সবর আরবি শব্দ। যার বাংলা অর্থ হল ধৈর্য। ধৈর্য সাফল্যের চাবিকাঠি। আল কুরআনে অনেক যায়গায় সবর তথা ধৈর্য শব্দটি এসেছে। ধৈর্যের এক অর্থ হচ্ছে কোন কাজের ফল লাভের জন্য তাড়াহুড়া না করা, কোন কাজ করতে যেয়ে সংকল্প হীনতার রোগে না ভোগা, দুঃখ কস্টে ভেঙ্গে না পড়া, লোভ লালসা ও ভয় ভীতি থেকে দূরে থাকা । মুসলিম জীবনের সাথে জড়িয়ে আছেন ধৈর্য। ধৈর্য সম্পর্কে আমাদের সমাজে অনেক ভুল ধারণা আছে । অনেকে মনে করেন জীবনভর দুঃখ বয়ে যাওয়া মনে হয় ধৈর্য , এর থেকে মুক্তি পেতে যে নিরলস পরিশ্রম করে যাওয়া যে ধৈর্য তা হয়ত অনেকেই জানেনা। এই বইটিতে সবর/ ধৈর্য সম্পর্কে ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হয়েছে । “মুক্ত বাতাসের খোঁজে” বইটির ভূমিকাঃ কতো তাড়াতাড়ি বড় হয়ে গিয়েছি... এই তো কয়েকদিন আগেই হাফ প্যান্ট পড়া দশ বছরের কোঁকড়া চুলের এক বালক। তার স্কুল মাঠের কড়াই গাছের নিচে বসে নদীর দিকে উদাস হয়ে তাকিয়ে থাকতো পায়ের কাছে আছড়ে পড়তো দলবেঁধে অনেক দূর পাড়ি দেওয়া ঢেউ। মাঝে মাঝে সে ঢেউ গোনার ব্যর্থ চেষ্টা করত। কিন্তু খেই হারিয়ে ফেলতো একটু পরেই। আবার উদাস হয়ে তাকাতো নদীর দিকে। কখনোবা আকাশের দিকে। দুপুরের বৃষ্টিভেজা রোদে মাঝে মাঝে একটা সোনালী ডানার চিল উড়ে বেড়াতো করুন সুরে ডেকে উঠতো হঠাৎ হঠাৎ। বালক আরো উদাস হয়ে যেত। কখনো কখনো বালক স্কুল থেকে ঘরে ফেরার সময় অবাক হয়ে দেখাতো আকাশ কালো করে বৃষ্টি আসছে। বালকের ছাতা ছিলো না। কাজেই সেই ঝুম বৃষ্টির কবল থেকে বই খাতা বাঁচাতে একহাতে স্যান্ডেল আর একহাতে বই নিয়ে ভোঁ দৌড় দিত। মাঝে মাঝে রাস্তার কাদায় পিছলে পড়ে যেত। কাঁদা মাখা ভুত হয়ে ফিরতো বাসায়। মা ব্যর্থ চেষ্টা করতো আঁচল দিয়ে মাথা মুছে দেয়ার। মায়ের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করে বালক দৌড়ে লাফিয়ে পড়তে পুকুরে। পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে বৃষ্টির ফোঁটা অদ্ভুত শব্দ করত। বালক অবাক হয়ে শুনতো সে শব্দ। দীর্ঘসময় পুকুরে দাপাদাপি করার পর চোখ লাল করে সে ফিরতো মা আঁচল দিয়ে মাথা মুছে দিতো শান্ত ছেলের মতো পুঁটি মাছের ভাজি দিয়ে গোগ্রাসে গরম ধোঁয়া উঠা ভাত গিলে, গল্পের বই নিয়ে কাঁথামুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়তো বালক। টিনের চালে তখন একটানা বৃষ্টি পড়তো । বাইরে সজনে গাছটা উড়ে চলে যেতে চাইতো হাওয়ার সাথে । কলাগাছের পাতায় চলতো বাতাসের দাপাদাপি। বালক গল্পের বইয়ে ডুবে যেত। দুষ্টু বাবার কবল। থেকে নৌকা নিয়ে পালাচ্ছে হাকল বেরি ফিন... সে কি নিরাপদে পালাতে পারবে? ওর বাবা ওকে ধরে ফেলবে? টান টান উত্তেজনা! একসময় ঘুমিয়ে পড়তো বালক ঘুমের ঘোরেই ভয় পেত বিদ্যুৎচমকের শব্দে। মা মাঝে মধ্যে পাশে এসে শুয়ে থাকতো ঘুমের ঘোরে সে জড়িয়ে ধরতো তার মায়ের গলা- এই পৃথিবীতে তার সবচেয়ে আপন মানুষটিকে......
ফ্লাপের কথাঃ আর কতকাল পথ ভুল করে ভুল রাস্তায় হেঁটে বেড়াবে উদ্ভান্তের মতো? আর কতকাল? তারচেয়ে বরং এসো খোলা জানালায়৷ এক ঝলক ঠাণ্ডা বাতাস এসে শীতল পরশ বুলিয়ে দেবে। কোসার স্নিগ্ধ মুখটাতে৷ বাইরে চেয়ে দেখো ঝকঝকে রোদে ভেসে যাচ্ছে চারিদিক, উঠোনকোণের পেয়ারা গাছটার পাতার আড়ালে মিষ্টি সুরে গান গেয়ে যাচ্ছে বুলবুলি, দূরের ঐ নীল আকাশে ডানা মেলেছে সোনালি ডানার চিল; হাতছানি দিয়ে ডাকছে তোমায়, যেন তুমি বেরিয়ে পড়ো মুক্ত বাতাসের খোঁজে...