উপক্রমণিকা ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই আন্দোলনের প্রতিবাদী চেতনা বাঙালি জাতিকে পাকিস্তানি শাসন ও শোষণ থেকে মুক্ত করার পাশাপাশি আজও বাঙালি জাতিকে উজ্জীবিত করে। বাঙালির রাষ্ট্রভাষার এই সংগ্রাম আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি লাভ করেছে। ইউনেস্কোর আহ্বানে বর্তমানে একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা লাভ করেছে। আমরা দেখতে পাই ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে পূর্ববাংলার সংবাদ-সাময়িকপত্রগুলো জনমত সংগঠনে তৎপর ছিল। অথচ সংবাদপত্রের ভূমিকা নিয়ে তেমন কোনো গবেষণাগ্রন্থ রচিত হয়নি বললেই চলে। এই গ্রন্থটি সেই শূন্যস্থান পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পটভূমি বিশ্লেষণেও গ্রন্থটি সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস। গ্রন্থটি রচনায় বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়া পর্যন্ত সংবাদ ও সাময়িকপত্রসমূহের উপর। ভাষা আন্দোলনে পূর্ব বাংলার সংবাদপত্রসমূহের একটা প্রেক্ষিত নির্ণয় করা এই গ্রন্থের অন্যতম উদ্দেশ্য। পাশাপাশি আন্দোলন চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন সংগঠনের ভূমিকা নিয়েও কিছুটা আলোচনা করা হয়েছে। প্রত্যেক গবেষণার পদ্ধতি ও ধরন নির্ভর করে সেই গবেষণা কর্মের উপাত্ত-উৎসের প্রাকৃতির উপর। আলোচ্য গবেষণাকর্মটি সংবাদপত্র ভিত্তিক। তাই এর সকল তথ্যই সংগৃহীত হয়েছে সংবাদপত্রের খবর, তথ্য, অভিমত ও বিশ্লেষণ থেকে। এজন্য গবেষণাকর্মটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে ঐতিহাসিক (ঐরংঃড়ৎরপধষ গবঃযড়ফ) এবং অন্যদিকে বিশ্লেষণী পদ্ধতি (অহধষুঃরপধষ গবঃযড়ফ) অবলম্বন করা হয়েছে। এই গ্রন্থের বিষয়বস্তু সাতটি অধ্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। অধ্যায়গুলো হচ্ছে: প্রথম অধ্যায়ে রয়েছে ভূমিকা। যাতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের উপর অতি সংক্ষিপ্ত