বর্ষ পরিক্রমায় এবারেও এসেছে ১৫ আগস্ট। আমরা ধর্মীয় পার্বণের মতাে এই দিবসটিকে উদ্যাপন করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার ঋণ পরিশােধ করি। গভীরভাবে চিন্তা করলে আমরা উপলব্ধি করে বঙ্গবন্ধুর প্রিয় দেশবাসীর কাছ থেকে এটুকুই কি সেই মুক্তিদাতা মহান নেতার প্রাপ্য ছিল? তার কর্মজীবনের ক্ষুদ্র পরিসরে তিনি সােনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। এবং সে কাজে তাঁর জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত তিনি উৎসর্গ করে গেছেন। শেষ পর্যন্ত সপরিবারে রক্ত দান করে মাটির ঋণ পরিশােধ করে গেছেন। এখন স্বাধীন বাংলায় বসবাস করে জীবনের সকল সুখ-সুবিধা উপভােগ করে আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞতার ঋণ কীভাবে পরিশােধ করছি? আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে আমরা বিশ্বাস করেছিলাম এবং আমাদের আশা ছিল বঙ্গবন্ধুকে পতাকা করে যখন এ সরকার ক্ষমতায় এসেছে এখন তার আরদ্ধ কাজই শুধু সমাপ্ত করে নয়, তাঁর গৃহীত আদর্শগুলােও পুনবাস্তবায়ন করবে। কারণ দীর্ঘ ২২ বছরে স্বার্থ প্রণােদিতভাবে নিজেদের শাসনের সুবিধার জন্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শগুলােকে খর্ব করা হয়েছে অথবা বিলুপ্ত করা হয়েছে। যে দুঃখী মানুষের জন্যে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা করেছিলেন, আজ তারা আরও দুঃখী। পূর্ববর্তী সরকারগুলাের ন্যায় এ সরকারও বাইরের অর্থাগমের কথা প্রচার করে দেশবাসীকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। কিন্তু তারা শুধু দারিদ্র নয়, চুরি, বাটপারি, ছিনতাই, নারীধর্ষণ, নারী ও শিশু পাচার ইত্যাদি অত্যাচারে সহ্যের শেষ সীমায় এসে পৌঁছেছে। সবার ওপরে প্রকৃত ধর্ম পরিত্যাগ করে কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি ধর্মের লেবাস পরে সেই নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকার মনে হয় নীরব দর্শক অথবা এই অত্যাচারে ভীত,কারণ সরকারের দিক থেকে আমরা কোনাে প্রতিবাদ বা প্রতিরােধের কোনাে ব্যবস্থা দেখতে পাচ্ছি না। এই ধর্মব্যবসায়ীরা শুনেছি স্বয়ং রাষ্ট্রপতিকে জুতাে দেখিয়েছেন। আমি মনে করি, এই জুতাে ১৩ কোটি বাঙালির মুখে এবং সকল স্তরের সরকারি নেতা-কর্মীদের মুখেও পড়েছে।