‘সময়ের কোনো হাত-পা নেই৷ থাকলে হয়তো গাছের সাথে বেঁধে প্রহার করে মনের মাঝে তৃপ্তি অনুভব করা যেত৷ এইতো সেদিন! আমরা দুভাই-বোন মাদরাসা অঙ্গনে পা রেখেছি৷ আজ কেমনে দাওরা হাদীস পড়ছি? আয়নার সামনে দাঁড়ালে হাসি পায়৷ আমি নাকি অনেক বড় হয়ে গেছি৷ দুদিন বাদে লোকে আমায় আলেম বলে ডাকবে৷ কী আছে আমার ভেতরে? আলেম হওয়ার যোগ্য হয়েছি? মন পিঞ্জরে প্রশ্নগুলো সকাল-বিকাল উঁকি মারে৷ আবার শুনছি, মীমকে বিবাহও দিতে হবে৷ সপ্তাহ ইতি নেওয়ার পূর্বেই বিয়ের প্রস্তাব দরজায় কড়া নাড়ে। আসলেই তাকে বিয়ে দিতে হবে? বিয়ে ছাড়া কি থাকা যায় না? কেমনে থাকবে, তারও যে একটা স্বপ্ন আছে, ভালোবাসা আছে, হৃদয় আছে, প্রেম আছে, আছে কত অনুভূতি…’ কথাগুলো লিখছিল ফাহিম তার ডায়েরিতে৷ এমনই সময় মীম পেছনে এসে অট্টহাসিতে ফেঁটে পড়ল৷ ফাহিম ডায়েরি বন্ধ করে কলমটা ঘুরাতে ঘুরাতে বলল, ‘এত হাসাহাসির কারণ কী? ‘বলব না৷ ‘বল শুনি৷ ‘নাহ৷ ‘ওকে বলতে হবে না৷ ‘দাঁড়াও আরেকটু হেসে নিই৷ ‘দাঁড়াতে পারব না৷ শুয়ে আছি৷ তোর হাসি শেষ হলে বলিস, তখন হাসির কারণ জানবো৷ মীম বহু কষ্টে কিছু সময় হাসল৷ হাসি বেরুচ্ছে না, তবুও যেন জোর করে হাসতে হলো তাকে৷ মীমের হাসি বন্ধ হতেই ফাহিম বলল, ‘কি, শেষ হলো তোর হাসির তৈল? এখন আর হাসির স্টার্ড নেয় না?’ মীম হাসিমুখে ফাহিমের পাশে বসতে বসতে বলল, ‘আরে ভাইয়া, এমনি হাসলাম৷ দেখলাম, একজনের সামনে অযথা হাসলে তার অনুভূতিটা কেমন হয়৷ অনেকে দেখবা, তুমি হাসছো, সেও হাসা শুরু করবে৷ অথচ কোন কারণে হাসছো তুমি, এটা কিন্তু সে জানেই না।’ ফাহিম এবার হেসে বলল, ‘অন্যকে হাসানোর ভালোই বুদ্ধি বের করেছিস দেখছি৷ বিয়ের পর তোর স্বামী যদি গোস্বা হয়, তাকেও এভাবে হাসাবি, কখনো ভুলতে পারবে না তোকে৷’ ‘হইছে থাক, আর বলতে হবে না৷ ধরো এই বছরে আমার রোজনামচার ডায়েরি৷’ ফাহিমের হাতে ডায়েরিটা দিয়ে মীম উঠতে যাবে, তখনই ফাহিম বলল, ‘আচ্ছা মারিয়ার খবর কী? পরে তো আর কথা হলো না, কিংবা কিছুই বলল না।’ মীম উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল, ‘আমার সাথে কথা হয় মাঝে মধ্যে৷ সে তার পরিবারকে জানিয়েছে ব্যপারটা৷ আব্বাও নাকি কথা বলেছেন৷ এখন বুঝছি না কী করব৷’ ‘আচ্ছা, আমার মোবাইলটা আন, আমিই কথা বলে দেখি, কী হয়৷’