২০০৪-০৫ সালে বিপ্রদাস রাজবংশী ইংল্যান্ডে গমনের আগে খণ্ডকালীন সময়ে জাইকার অর্থায়নে পদ্মা ব্রিজ এর ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি প্রজেক্টে জিওটেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ হিসেবে বুয়েটের তৎকালীন অধ্যাপক ড. এ এম এম সফিউল্লাহ এর তত্ত্বাধানে প্রস্তাবিত পদ্মা ব্রিজের দুই পাড়ে সয়েল টেস্টিং এর কাজ করেছেন। যে সকল সংগঠন বাঙালিত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে এবং ধর্মান্ধতার কুচক্রীকে প্রতিহত করার সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যুক্ত, কণ্ঠশীলন রয়েছে প্রথম সারিতে। বিপ্রদাস রাজবংশী সাহিত্যের বাচিক চর্চা ও প্রসার প্রতিষ্ঠান কণ্ঠশীলনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ইংল্যান্ডে প্রবাসী হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত উনি আবৃত্তির চর্চায় যুক্ত ছিলেন। তিনি প্রবাসে থাকা সত্ত্বেও কণ্ঠশীলনের কর্মকাণ্ডে ভার্চ্য়ুালি যুক্ত থাকেন এবং আজীবন লগ্ন থাকাতে প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ। বর্তমানে ইংল্যান্ডে পরিবারসহ স্থায়ীভাবে বসবাস এবং স্থানীয় সরকারী প্রতিষ্ঠানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে কর্মরত। এই প্রবাসে ‘পূরবী বাঙ্গালী সাংষ্কৃতিক গোষ্ঠী, লীড্স’-এর একজন সক্রিয় সদস্য। তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাছাড়া সময় পেলে মাঝে মাঝে তবলা চর্চা, রবীন্দ্রনাথের গান শোনা এবং বই পড়াতো আছেই। রবীন্দ্রনাথের শেষ বয়সের গানগুলো বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ এবং কিছু লেখালেখির চেষ্টা করে যাচ্ছেন। নাটকে অভিনয়ের প্রতি বরাবরই আগ্রহ আছে তার। এযাবৎ তিনি পূরবীর চারটি মঞ্চনাটকে অভিনয় করেছেন। উইকেন্ডগুলো ব্যস্ততায় কাটে সাহিত্য চর্চায় - ছোটগল্প, প্রবন্ধ ও রসাত্মক কবিতা লেখায় যদিও আত্মকথন ও স্মৃতিকথা লেখার প্রতি আগ্রহ একটু বেশি। কিশোর বয়সের চোখে দেখা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্বর হয়ে আছে মনের গহীনে, শুধু লেখার কাজটি আরম্ভ করার প্রতীক্ষায় বিপ্রদাস রাজবংশী।
সমাজের আলোকিত মানুষের চিন্তার ও সৃজনশীল কর্মের স্মৃতিকথা লিপিবদ্ধ করাটা সাহিত্য চর্চার একটি অংশ। সাহিত্য চিন্তাই আত্মার চিন্তাস্বরূপ। আত্মকথন বা স্মৃতিকথা সুখের হয় তাদের, যারা সৃজনশীল কর্মের দ্বারা অন্য মানুষকে আলোকিত, অনুপ্রাণিত এবং উৎসাহিত করে। এই গ্রন্থটিতে সাহিত্যের কিছু গুরুগম্ভীর প্রাবন্ধিক আলোচনা করা হয়েছে যা পাঠকের মনে ভাবনার উদ্রেক করবে, রয়েছে সৃজনশীল কর্মের উল্লেখ যা পাঠককে অনুপ্রাণিত করবে এবং রসাত্মক কবিতা ও গল্পের মাধ্যমে পাঠককে নির্মল আনন্দ দিবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ১৯৮৪ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিগ্রী লাভ করেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (এইচবিআরআই) রিসার্চ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন। এইচবিআরআইতে কর্মরত অবস্থায় তিনি ১৯৯৭ সালে বুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ উচ্চতর ডিগ্রী মাস্টার্স অফ সায়েন্স ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (M Sc Eng) অর্জন করেন। উচ্চতর ডিগ্রীর প্রাক্কালে এবং পরবর্তি সময়ে দেশ বিদেশের জার্নালে তার কয়েকটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। ২০০০ সালে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এবং কমনওয়েলথ সাইন্স কাউন্সিলের অর্থায়নে একটি সেমিনারে টেকনিক্যাল পেপার উপস্থাপনের জন্য ইংল্যান্ড ভ্রমণ করেন। এইচবিআরআই-তে বাড়ি নির্মাণে বাড়ির মালিকদের জন্য একটি প্রশিক্ষণ ‘নিজের বাড়ি নিজেই করি’ এর পরিচালনা করা হয়। বাংলাদেশে পাকা-বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে এই প্রশিক্ষণ এক যুগান্তকারী সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ হিসেবে সমাজে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিপ্রদাস রাজবংশী এইচবিআরআই-তে কর্মকালীন সময়ে প্রায় ১৫ বছর কোর্স কো-অর্ডিনেটর হিসেবে এই প্রশিক্ষণটি সফলতার সাথে পরিচালনা করে সুনাম অর্জন করেছিলেন।