বর্তমান মুসলিম উম্মাহর অতি মূল্যবান সম্পদ, সারা বিশ্বের উলামা ও সর্বশ্রেণির দ্বীনদার লোকের কাছে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য ও বরণীয় ব্যক্তি হলেন শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী ছাহেব দামাত বারাকাতুহুম। তাঁর বাবা ছিলেন বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘মাআরিফুল কুরআন’-এর লেখক মুফতীয়ে আযম হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ শফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তাঁর বাবা ছিলেন হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াসীন ছাহেব রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। বক্ষ্যমাণ কিতাবটি মূলত তাঁরই জীবনী। যা লিখেছেন তাঁর ছেলে মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ.। তাতে প্রসঙ্গক্রমে এই খান্দানের অনেক তথ্য ও ইতিহাস উল্লেখিত হয়েছে, প্রত্যেক পাঠকের জন্য যাতে রয়েছে শিক্ষণীয় অনেক কিছু। আমি নিজেও জানতাম না যে, হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াসীন ছাহেব রহ.-এর বাবা জনাব তাহসীন আলী ছাহেব রাহ. অন্ধ ছিলেন। ভাবলে যেন কেমন লাগে! অন্ধ বাবার ছেলে পারিবারিক কঠিন সংকটের মধ্যেও কী কষ্ট করে পড়াশোনা সমাপ্ত করেছেন। আসাতিযায়ে কেরামের সীমাহীন মহব্বত ও ভালোবাসা নিয়ে কীভাবে বেড়ে উঠেছেন। এরপর ভালো ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও কী কুরবানীর মানসিকতায় আজীবন দারুল উলূম দেওবন্দের ফারসী বিভাগে দরসের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে গেছেন। তার এই কুরবানী ও কুরবানীর প্রতিদান থেকে শেখার অনেক বিষয় অর্জন হবে ইনশাআল্লাহ। আজীবন ফারসী বিভাগে খেদমতরত সেই উস্তাযের ঘরে জন্ম নিয়েছেন মুফতীয়ে আযম মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ.। তাঁর ঘরে জন্ম নিয়েছেন শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী ছাহেব দামাত বারাকাতুহুম। একেবারে সাধারণ একটি পরিবার কীভাবে অসাধারণ এবং সর্বোচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়! খান্দানের পূর্বপুরুষদের কুরবানী ও বুযুর্গ মনীষীদের দু‘আর বরকতে কী না হতে পারে! তবে ক্ষেত্রে একথা ভেবে ভালো লাগে যে, যদি আল্লাহর বিধান এমন হতো, কেবল বড়দের ছেলেরাই বড় হবে। কেবল আলেমের ছেলেরাই আলেম হবে। তাহলে আমাদের কী অবস্থা হতো? আমরা হয়তো জীবনে কিছুই হতে পারতাম না। কিন্তু আল্লাহর বিধান এমন যে, সাধারণ পরিবারের অতি সাধারণ মানুষের ঔরস থেকেও তৈরি হতে পারে জগতদ্বিখ্যাত আলেমে দ্বীন। হতে পারে সুউচ্চ মাকাম ও মর্যাদার অধিকারী বুযুর্গ। হতে পারে সর্বজনমান্য খাদেমে ইলম ও দ্বীন। এতে যে কত মানুষের কত সান্ত্বনা ও আনন্দের উপকরণ রয়েছে, হিসাব নেই।