"রক্তঝরা মার্চ ১৯৭১ অসহযোগ আন্দোলন থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের অগ্রনায়ক জাতীয় নেতা তােফায়েল আহমেদ ১৯৭১-এর রক্তঝরা মার্চের ঘটনাবলি অবলম্বনে লিখেছেন, অসহযােগ আন্দোলন থেকে স্বাধীনতার ঘােষণা। '৭১-এর ১ মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া খান আকস্মিক এক বেতার ভাষণে পূর্বাহ্নে আহুত ৩ মার্চে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় পরিষদের অধিবেশন একতরফাভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘােষণা করেন। এর বিরুদ্ধে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা বাংলায় সর্বাত্মক অসহযােগ আন্দোলনের সূচনা করেন। ভারতের জাতির জনক মহাত্মা মােহনদাস করমচাঁদ গান্ধী অসহযােগ আন্দোলনের স্রষ্টা। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সূচিত অসহযােগ আন্দোলনে জনসাধারণের অংশগ্রহণ এতােটাই তীব্ররূপ ধারণ করে যে, গান্ধীজী সূচিত অসহযােগ আন্দোলনকেও তা ছাপিয়ে যায়। ফলত, বিশ্বজনমতের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় বাংলাদেশের প্রতি। বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামকে পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করার অপপ্রয়াস চালিয়েছিল। কিন্তু দূরদর্শী নেতা বঙ্গবন্ধু তা উপলব্ধি করে অসহযােগ আন্দোলনের সূচনা করেন এবং বাংলার মানুষকে স্বাধীনতার মােহনায় ঐক্যবদ্ধ করেন। বঙ্গবন্ধু গৃহীত কর্মসূচি ‘এএলআর' তথা আওয়ামী লীগ রেগুলেশন, আর পাকিস্তান সামরিক শাসকগােষ্ঠীর নির্দেশাবলি ‘এমএলআর’ তথা মার্শাল -ল রেগুলেশন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এবং এমএলআর প্রত্যাখ্যাত হয় ও এএলআর অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হতে থাকে। বঙ্গবন্ধু ঘােষিত অসহযােগ কর্মসূচির সাফল্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের অনুকুলে চলে আসে। পাকিস্তানের সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ ও সামরিক শাসকগােষ্ঠী ঢাকায় এসে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলােচনায় বসতে বাধ্য হয়। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ হয়ে ওঠে কেন্দ্রীয় আলােচ্য বিষয়। আলােচনার নামে কালক্ষেপণ করে শাসকগােষ্ঠী গণহত্যার প্রস্তুতি নেয়, অপরদিকে বঙ্গবন্ধুর সার্বিক দিকনির্দেশনা পেয়ে জনসাধারণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করে। অবশেষে শাসকগােষ্ঠী ২৫ মার্চের যে মুহূর্তে গণহত্যা শুরু করে, ঠিক পর মুহূর্তে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘােষণা করেন। তৎকালের বিভিন্ন পত্রিকার ক্লিপিংস, গ্রন্থাদি থেকে আহরিত তথ্যাদি ও আলােকচিত্র সহযােগে, অসহযােগ আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক তােফায়েল আহমেদের স্মৃতিচারণে গ্রন্থটিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের রক্তঝরা মার্চের ঐতিহাসিক পর্বটি প্রতিফলিত হয়েছে জীবন্তভাবে। অতীতের ঘটনাবলি কিভাবে জীবন্ত হয়ে ওঠে তারই প্রামাণিক দলিল এই গ্রন্থটিমহান মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাস উপলব্ধিতে সহায়ক হবে।
Title
রক্তঝরা মার্চ ১৯৭১ অসহযোগ আন্দোলন থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা
তোফায়েল আহমেদ ২২ অক্টোবর ১৯৪৩ জন্মগ্রহন করেন। তিনি একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুন তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি পাঁচ দফা জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পদের একজন সদস্য এবং তিনি ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।