‘ভাষা-আন্দোলনে গবেষণাকেন্দ্র, গৌরীগ্রাম, পাবনা’-র ‘ভাষাসংগ্রামী-গ্রন্থমালা’র প্রথম গ্রন্থ রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলন ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্'। বছর না-ঘুরতেই এর সব কপি শেষ হয়ে যায়। সংগত কারণেই বের হলো এর দ্বিতীয় সংস্করণ এবং তা নতুনরূপে ও বৃহৎ কলেবরে । বাঙালির জাতীয় জীবনের বাঁক-বদলকারী ঐতিহাসিক ঘটনা ভাষা-আন্দোলনে জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ রয়েছে গুরুত্ত্বপূর্ণ অবদান । ছাত্রসমাজ ও রাজনীতিবিদদের রাজপথে নামার আগেই তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার পক্ষে মসিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। লেখনীর মাধ্যমে যেমন তেমনি সভা-সমাবেশ এবং মিছিলে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে তিনি বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অবদান রেখেছেন। এ গ্রন্থে সমকালীন পত্র-পত্রিকা, রাজনৈতিক ও ছাত্রসংগঠনের ইশতাহার, ভাষা-আন্দোলনের দলিলপত্র, ইতিহাসগ্রন্থ, স্মৃতিচারণামূলক লেখা, ডায়েরি প্রভৃতির সাহায্যে ইতিহাস ও ঐতিহ্যসন্ধানী গবেষক ড. এম আবদুল আলীম নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্তের আলোকে রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলনে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর অবদানের স্বরূপ উদঘাটন করেছেন। গ্রন্থটি ইতিহাসের অনুসন্ধানী গবেষক এবং নতুন প্রজন্মের পাঠকের বিশেষ উপকারে আসবে ।
ড. এম আবদুর ইতিহাস-ঐতিহ্যসন্ধানী গবেষক। সাহিত্য-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য বিষয়ে এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থ তিরিশের অধিক। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো - ভাষা-আন্দোলন-কোষ, রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলন : জেলাভিত্তিক ইতিহাস, ত্রিশোত্তর বাংলা কাব্যে বিচ্ছিন্নতার রূপায়ণ, বাংলা কাব্যের স্বরূপ ও সিদ্ধি-অন্বেষা, শহীদ কাদরীর ত্রিভুবন, রবীন্দ্রনাথ উত্তর-আধুনিকতা ও বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন, পাবনায় ভাষা-আন্দোলন, সিরাজগঞ্জে ভাষা আন্দোলন, আনিসুজ্জামান, সুচিত্রা সেন, বন্দে আলী মিয়া : কবি ও কাব্যরূপ, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে ছাত্রলীগের ভূমিকা, আওয়ামী লীগ ও ভাষা আন্দোলন প্রভৃতি। নেশা লেখালেখি হলেও পেশা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা। এক সময় ঢাকা কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ও কলা অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার লাভ করেছেন। তাঁর জন্ম ১৯৭৬ সালের ১ ডিসেম্বর। জন্মস্থান পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার গৌরীগ্রামে।