...আদি। ছাব্বিশের এক টগবগে যুবক! বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। বিরাট বড়লোকের ছেলে। দ্বীনে আসার পর বাবার অবৈধ আয়-উপার্জন তাকে আর চুপ থাকতে দেয় না। প্রতিবাদ করে। তখনই ঘটে বিপত্তি। বাবার প্রাসাদোপম বাড়ি থেকে তাকে বিতাড়িত হতে হয়। ...প্রাসাদ ছেড়ে এসে, অতি সাধারণ একটা মেসে শুরু হয় আদি'র সাদাসিধে জীবন। যে জীবনে প্রাচুর্য নেই; কিন্তু হৃদয়ভরা প্রশান্তি আছে। আছে স্রষ্টাকে নিয়ে ভাবার অফুরন্ত উপকরণ। ...অন্যের উপকারের ভাবনা আদিকে তাড়িয়ে বেরায়। এই ভাবনা তাকে নিয়ে যায় সিলেটের শ্রীমঙ্গলে। একজন ইমাম সাহেবের উপকার করতে গিয়ে মহা সংকটে পড়ে আদি। ...'আদি' আমাদের গল্পের মূল ভাবনা হলেও, ইমাম সাহেবই যেন ছড়িয়ে আছেন এই গল্পের 'অন্তে'। ইমাম সাহেবকে খুঁজতে গিয়ে ঘটতে থাকে নানান বিচিত্র ঘটনা! একে একে সামনে আসতে থাকে চরম কিছু বাস্তবতা। কে এই ইমাম! ...ট্রেনে আদির সঙ্গে পরিচয় হয় একজন বই-বালকের। স্মার্টফোনের এই যুগেও বইয়ের পাতায় ডুবে থাকাই যার নেশা। এই নেশার আড়ালে তার অন্য কোনো পেশা নেই তো!...কে এই বালক!! ...আদির ব্যাগ চুরি হয় ট্রেনেই। ব্যাগে ছিল জরুরি কিছু কাগজপত্র আর নগদ টাকা। ব্যাগ হাতিয়ে নেওয়াই চোরের উদ্দেশ্য ছিল না। তাহলে উদ্দেশ্যটা কী! ...কিছু বিভ্রাট। কিছু রোমাঞ্চ। অনেক রহস্য। আর, কিছু চরম সত্যের মুখোমুখি নিয়ে দাঁড় করাবে পাঠককে।
জনপ্রিয় ঔপন্যাসকি মাহিন মাহমুদের পরিচয়। ঔপন্যাসিক এবং গল্পকার হিসেবে মাহিন মাহমুদ এই সময়ের একটি পাঠকপ্রিয় নাম। গ্রামীণ পরিবেশের রূপ, রং এবং সৌন্দর্য গায়ে মেখে তার বেড়ে ওঠা। গ্রামের স্কুলে পড়াশোনোর সূচনা। এরপর বাবার ব্যবসার সুবাদে শহরমুখো হওয়া এবং মাদরাসাশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া। তিনি ভালোবাসেন স্বপ্ন দেখতে। স্বপ্ন দেখেন সুন্দর একটি দেশের। যে দেশের মানুষগুলোর চিন্তা-চেতনা হবে প্রকৃতির মতোই সুন্দর এবং মায়াময়। কিন্তু, সমাজের চিত্র এর ব্যতিক্রম। এ চিত্র তাকে ব্যথিত করে। ব্যাকুল করে হৃদয়। তবুও তার স্বপ্ন-সমাজ একদিন বদলাবেই। দিন বদলের স্বপ্ন নিয়েই তিনি কলম চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই পাঠকসমাজের কাছে সে বার্তা তিনি পৌঁছাতেও পেরেছেন। ‘আঁধার মানবী’, ‘শেষ চিঠি’, ‘একটি লাল নোটবুক’, ‘পুণ্যময়ী’, ‘প্রাসাদপুত্র’ ‘প্রাসাদপুত্র-২-এর মতো ছয়-ছয়টি সুখপাঠ্য উপন্যাস ছাড়াও লিখেছেন আত্মপরিচর্যামূলক গল্পগ্রন্থ-‘কাল থেকে ভালো হয়ে যাব’। বইগুলোর অবস্থান এখন পাঠকপ্রিয়তার সর্বোচ্চ শিখরে। লেখনীর মাধ্যমে তিনি পেরেছেন সমাজের বাস্তব চিত্র অত্যন্ত সফলতার সাথে তুলে ধরতে। ফেসবুক আর ইউটিউবে আকৃষ্ট যুবসমাজকে তিনি পেরেছেন বইপাঠের প্রতি উৎসাহিত করতে। দ্বীনের প্রসার এবং সুন্দর, সুশোভিত সমাজ বিনির্মাণে তার এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক। আমরা লেখকের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করি।