"অচিন পাখি" বইয়ের ফ্ল্যাপে লিখা ‘কে আমি?’ প্রশ্ন নিজের কাছেই। মানব সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই মানুষের বিস্ময় মানুষ নিজেই এবং প্রকৃতি। তাই মানুষের চিরায়ত এই প্রশ্ন। উত্তর খুঁজতে গিয়ে পথের সন্ধানে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে নানা আচারের। নানা ধর্মের। দর্শনের গবেষণার। ‘নিজেকে জানাে’। গ্রীক দার্শনিক সক্রেতিস আড়াই হাজার বছর আগে পথ নির্দেশ করলেও মেলেনি উত্তর। ‘খাচার ভিতর অচিন পাখি কমনে আসে যায়......।’ নিরক্ষর দার্শনিক, বাঙালি বাউল লালন শাহ-এর প্রায় দুইশ' বছর আগের এই প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা। অথচ বেঁচে থাকার অদম্য তাগিদে মানুষ গড়ে তােলে সমাজ, সভ্যতা, নিয়ম-কানুন, প্রতিষ্ঠান। এই সব লক্ষ্যের একই কেন্দ্রীভূত প্রেরণা, ভালবাসা। বেঁচে থাকার অন্যতম এক উপাদান স্বাধীনতা। যার ভিত্তি গণতন্ত্র ও সহিষ্ণুতা। কিন্তু কখনােই যেন মানুষ সবকিছু একসাথে পায় না। পরশ পাথর খুঁজে ফেরা ক্ষ্যাপার মতাে মানুষের নিরন্তর অন্বেষণ এক ‘অচিন পাখি’র। সে কী কেবলই নিজের প্রতি ভালবাসা? কামজ প্রেম? দেশপ্রেম? নাকি গণতন্ত্র? বিশ্ব সমাজের এক প্রান্তীয় দেশ বাংলাদেশের ঘটনাবলী বিশ্বকে নাড়া না দিলেও, নাড়া দেয় বাঙালি জাতির মন ও মননে। এক আপাতঃ স্বাধীন সমাজের ক্লিষ্ট এক সময়ে ঘটনাপ্রবাহের ধারায় মানুষের প্রেম, ভালবাসা, বিরহ ও জীবনাচরণের ভিতর খুঁজে ফেরা হয়েছে সেই ‘অচিন পাখি’ এই উপন্যাসে।