আলোচ্য বিষয়ের সারসংক্ষেপ জ্ঞানের উৎসের তালিকা ও নীতিমালায় ভুল থাকলে ভুল জ্ঞান অর্জিত হবে তথ্যটি বোঝা খুবই সহজ। কিন্তু জ্ঞানের মূল উৎস অবিকৃত থাকার পরও জ্ঞানের উৎসের তালিকা ও নীতিমালায় ভুল ঢোকে কীভাবে তা বোঝা অবশ্যই কঠিন। অন্যদিকে জ্ঞানের মূল উৎস অবিকৃত থাকার পরও মৌলিক জ্ঞানে ভুল ঢোকাতে গেলে জ্ঞানের উৎসের তালিকা ও নীতিমালায় ভুল ঢোকাতে হবে এটিও চিরসত্য কথা। মুসলিম জাতির জ্ঞানের মূল উৎস আল কুরআন অক্ষরে অক্ষরে অপরিবর্তিত আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। কুরআন হাতে নিয়েই মুসলিম জাতি জীবনের সকল দিকে শ্রেষ্ঠ ছিল মাত্র ৫০০-৭০০ বছর পূর্বে। সে জাতি আজ জীবনের সকল দিকে চরমভাবে অধঃপতিত। এতে ধারণা করা যায় মুসলিম জাতির জ্ঞানের উৎসের তালিকা ও নীতিমালায় ভুল ঢুকেছে। কিন্তু এ কাজ কে করেছে, কীভাবে করেছে এবং জ্ঞানের উৎসের তালিকা ও নীতিমালায় ঢুকিয়ে দেওয়া ভুলগুলো কী তা জানতে না পারলে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ মুসলিম জাতি খুঁজে পাবে না। রসূল (স.)-এর হাদীস নিয়ে ইবলিস ও তার দোসররা যা করেছে তার অনেকখানি মুসলিম জাতি ধরতে পেরেছে এবং তার প্রতিকারমূলক অনেক কাজ করা হয়েছে। কিন্তু হাদীস নিয়ে মুসলিম জাতির কাজ এখনো শেষ হয়নি। কুরআন রিসার্চ ফাউন্ডেশন হাদীস নিয়ে কাজ করছে এবং জাতি কিছু দিনের মধ্যে তা দেখতে পাবে। ফিক্হ নিয়ে ইবলিস ও তার দোসররা যে মহাপ্রলয় ঘটিয়ে রেখেছে তা এখনো মুসলিম জাতির অগোচরে। পুস্তিকাটি পড়লে আশাকরি মুসলিম জাতি সে বিষয়গুলো তথ্যভিত্তিক জানতে পারবে। ফলস্বরূপ আশা করা যায়, অনেক মুসলিম এর প্রতিকারের জন্য দাঁড়িয়ে যাবে।
Title
গবেষণা সিরিজ - ৩৮ : ইবলিস ও তার দোসরদের ষড়যন্ত্রের কবলে জ্ঞানের ইসলামী উৎস ও নীতিমালা
প্রফেসর ডা. মাে. মতিয়ার রহমানের জন্ম বাংলাদেশের খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার আরজি-ডুমুরিয়া গ্রামের এক ধার্মিক পরিবারে। নিজ গ্রামের মাদ্রাসায় তাঁর শিক্ষা জীবন আরম্ভ। ছয় বছর মাদ্রাসায় পড়ার পর তাঁকে ডুমুরিয়া হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। ১৯৬৮ ও ১৯৭০ সালে তিনি যথাক্রমে ডুমুরিয়া হাইস্কুল ও সরকারী বি.এল কলেজ, দৌলতপুর, খুলনা থেকে কৃতিত্বের সাথে এস. এস. সি. ও এইচ.এস.সি পাস করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৭৭ সালে MBBS পাস করেন। দ্বিতীয় ও ফাইনাল প্রফেশনাল MBBS পরীক্ষায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাক্রমে ৬ষ্ঠ ও ১০ম স্থান অধিকার করেন। MBBS পাস করে তিনি সরকারী চাকুরীতে যােগ দেন এবং ১৯৭৯ সালে ইরাক সরকারের চাকুরী নিয়ে সেদেশে চলে যান। ৪ বছর ইরাকের জেনারেল হাসপাতালে সার্জারী বিভাগে চাকুরী করার পর তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে যান এবং ১৯৮৬ সালে গ্লাসগাে রয়েল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স এন্ড সার্জনস থেকে জেনারেল সার্জারীতে FRCS ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে ফিরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে কনসালট্যান্ট হিসেবে যােগদান করেন। সর্বশেষ তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রফেসর এবং সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ল্যাপারােসকোপ (Laparoscope) যন্ত্র দিয়ে একক হাতে। (Single Handed) পিত্তথলির পাথর (Gall Bladder Stone) অপারেশনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞ সার্জন (surgeon)। প্রফেসর ডা. মাে. মতিয়ার রহমান চিকিৎসক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি দীর্ঘ দুই দশক ধরে কুরআন গবেষক হিসেবে মৌলিক কাজ করে আসছেন। তাঁর গবেষণার বিষয় হলাে- ইসলামের সে সকল মূল বিষয় যা সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসের বক্তব্য এবং বর্তমান বিশ্বের মুসলিমদের জ্ঞান ও আমলের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য বিদ্যমান। ইতােমধ্যে তার লেখা ৩৯টি গবেষণাধর্মী পুস্তিকা প্রকাশিত হয়েছে। এসব পুস্তিকায় তিনি মুসলিম সমাজে প্রচলিত জ্ঞানগত ভুল ধারণার সংস্কার করে কুরআন, সুন্নাহ ও Common sense -এর আলােকে ইসলামের সঠিক তথ্য তুলে ধরেছেন। তার সবচেয়ে উল্লেখযােগ্য কাজ হলাে ‘আল কুরআন যুগের জ্ঞানের আলােকে অনুবাদ’। এ অনুবাদখানির সম্পাদনা পরিষদের নেতৃত্ব তিনি দিয়েছেন।