"সূরা-কাহাফ: মূল আরবী, তরজমা এবং আধুনিক ব্যাখ্যা" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: সুরা কাহাফ নাজিল হয় আল্লাহর রাসুল হযরত মুহাম্মদ (স:) এর মদীনায় হিজরতের পূর্বে মক্কায় অবস্থানের শেষ বৎসরে। এই সূরার ছায়ায় ইহুদিবাদের ভন্ড ধর্মীয় ধারণার ঐশ্বরিক উন্মােচন ঘটে। এই সূরায় শেষ যামানায় ইহুদিদের দ্বারা সৃষ্ট সমস্যার প্রতি ইংগিত করা হয়। শেষ যামানায় বিশ্ব প্রত্যক্ষ করবে ভন্ড মসীহ দাজ্জাল এবং ইয়াজুজ মাজুজ এর নৃশংস আক্রমণ যার শিকার হল শুধুমাত্র ইসলাম নয় বরং সমগ্র মানবজাতি। রহমতের নবী আমাদের জন্য এমন কিছু ভবিষ্যৎ ঘটনা প্রকাশ করেন যা আশ্চর্যজনক। যেমন, রিবা। সুদ মানুষের জীবনে এমনতর প্রভাব বিস্তারকারী হবে যে বিশ্বের অধিকাংশ জনগােষ্ঠী চরম দারিদ্রে জীবনাতিপাত করবে। এসময় একজন দরিদ্র ব্যক্তি এ অবস্থা কিভাবে মােকাবিলা করবে সে নির্দেশনা ব্যক্ত হয়েছে সুরা কাহাফের ৩২-৩৪ আয়াতে। আখেরী জামানায় ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এতটাই ভয়াবহ হবে যে, ইসলাম অনুসারে জীবনাচরন করা হবে যেন কেউ তার হাতে জ্বলন্ত কয়লা ধারন করেছে। আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন মানুষের এমন এক যামানা আসবে যে যামানায় দীনের উপর সুদৃঢ় ব্যক্তির অবস্থা হবে জ্বলন্ত অংগার মুষ্টিতে ধারণকারী ব্যক্তির মত (তিরমিযি, ২২৬৩, ই.ফা)। গুহায় অবস্থানকারী যুবকদের ঘটনা বর্তমান সময় ও সবশেষে ইসলামের বিজয়ের ইংগিতবাহী (আয়াত ১৩-২০)। এই শেষ সময়ের মানুষের মধ্যে প্রতি হাজারে ৯৯৯ জন হবে ইয়াজুজ-মাজুজ (সহীহ বুখারি হাদিস নং৬৫৩০) তবে এই ঈমানহীন দুনিয়ায় সংশ্রব ত্যাগ করাটা সকলের দ্বারা সমালােচিত, নিন্দিত ও প্রত্যাখ্যাত হবে, এমনকি মূখ মুসলিম জনতাও এর অংশীদার হবে। একারনে মুসলিমদের আত্মসচেতন করাও এই তাফসীরের অন্যতম উদ্দেশ্যে।
ইমরান নযর হোসেন। ক্যারিবিও দ্বীপপুঞ্জের ত্রিনিদাদে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালে। আলিমিয়া ইসলামিক ইনস্টিটিউট (করাচি) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং পাশাপাশি করাচি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আল-আযহার সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন সুইজারল্যান্ডের Graduate Institute of International Relations থেকে। দায়িত্ব পালন করেন করাচির আলিমিয়া ইসলামিক ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল হিসেবে, ছিলেন করাচির World Muslim Congress-এর রিসার্চ ডাইরেক্টর এবং মিয়ামির Islamic Institute for Education and Research-এর ডাইরেক্টরও। এছাড়াও তিনি ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনীতিক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ইসলাম, সমকালীন রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক বাস্তবতা এবং সর্বোপরি আধুনিক যুগের বাস্তবতা তুলে ধরতে তিনি সত্যিই অনবদ্য। তাঁর গ্রন্থের বিষয়বস্তু বর্তমানে বাস্তবে সত্যে পরিণত হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত তাঁর বক্তব্যকে সত্যায়িত করে চলছে, যা সত্যই তাঁর আধ্যাত্মিক উচ্চতার পরিচয় বহন করে। Jerusalem in the Quran- An Islamic View of the Destiny of Jerusalem তাঁর আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থ।