চারটি অংশে বিভক্ত আমাদের এবারের বইটি। প্রথম অংশেই রয়েছে ইমাম ইবনুল কাইয়ূম আল জাওযী রাহিমাহুল্লাহ এর Prophetic Medicine (তিব্বে নববী) থেকে নেয়া রাসূলুল্লাহ (সা:) এর চিকিৎসা পদ্ধতি। আল্লাহর রাসুল (সা:)কোন রোগের জন্যকী চিকিৎসা করতেন অথবা কী চিকিৎসা করতে আমাদের কে নির্দেশ দিয়েছেন তাবিস্তারিত বর্ণিত আছে হাদিসের Reference সহ। প্রতিটি হাদিসের সাথে সংশ্লিস্ট ছবি দেওয়াহয়েছে, যাতে করে বুঝতে সুবিধা হয়। রোগ হলেই আমরা ছুটে যাই ডাক্তার এর কাছে, এর কাছে, ওর কাছে, কিন্তু আল্লাহ ও তাররাসুলের দেখানো সর্বোত্তম পথ ও পাথেয় আমরা ভুলেই বসেছি। বলতে গেলে মনেই পরেনাসেসব মহা ঔষধের কথা যা পবিত্র কোরআনে বর্ণিত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা নবীমোহাম্মদ (সাঃ) মাধ্যমে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন রোগ থেকে বাচার উপায় এবং রোগহলে তা থেকে নিরাময় এর উপায়। আর সেই সব অথেনটিক হাদিস নিয়েই থাকছে বইটিরএকাংশ। আলহামদুলিল্লাহ। দ্বিতীয় অংশে থাকছে: আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার গুণবাচক নাম সমূহ এবং প্রত্যেকটি নামের সাথেকোরআনের সংশ্লিষ্ট একাধিক আয়াত লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, যাতে করে আমরা অনুধাবনকরতে পারি আল্লাহর গুনবাচক নামের মর্মার্থ এবং প্রয়োজনে সেসব উপযুক্ত নাম যাতেআমাদের দৈনন্দিন দোয়ায় উল্লেখ করে আল্লাহর কাছে আমাদের চাওয়া চাইতে পারি। তৃতীয় অংশে যা থাকছে তা হলো: কোরআনে বর্ণিত 'রাব্বানা ও আল্লাহুম্মা' সম্বলিত দোয়া সমূহ। একত্রে দেওয়া হয়েছে বুঝা ওমুখস্থ করার সুবিধার্থে। যাতে করে আমরা অর্থ বুঝে দোয়াগুলো আমাদের প্রয়োজনেআমাদের জীবনে কাজে লাগাতে পারি। চতুর্থ অংশে সংযুক্ত করা হয়েছে: কোরআনের বাহিরে 'আল্লাহর বাণী' যে গুলো 'হাদিসে কুদসী' নামে পরিচিত। হাদিসেকুদসীতে আল্লাহর দয়া-মায়া, ক্ষমার দৃষ্টান্ত, করুনার বর্ণনা রয়েছে। যেগুলো জানাআমাদের জন্য খুবই জরুরী। যা অন্তরে প্রশান্তি আনে ও আশার সঞ্চার হয়।'সুবহানাল্লাহ'!!!
আল্লামা ইবনু কাইয়্যিমিল জাওযীয়া (রহঃ) ছিলেন ইসলামী চিন্তাবিদ, ফকিহ, তাফসীরবিদ, হাদীসজ্ঞ এবং চিকিৎসাশাস্ত্রের পণ্ডিত। তাঁর পূর্ণ নাম ছিল আবু আব্দুল্লাহ্ শামসুদ্দ্বীন মুহাম্মাদ বিন আবু বকর বিন আইয়্যুব আদ দিমাশকী। তিনি ৬৯১ হিজরী সালে দামেস্কে জন্মগ্রহণ করেন এবং তাঁর পিতা দীর্ঘ দিন দামেস্কের আল জাওযীয়া মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বলেই তাঁর পিতা আবু বকরকে قيم الجوزية কাইয়্যিমুল জাওযীয়াহ অর্থাৎ মাদরাসাতুল জাওযীয়ার তত্ত্বাবধায়ক বলা হয়। পরবর্তীতে তাঁর বংশের লোকেরা এই উপাধীতেই প্রসিদ্ধি লাভ করে। ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমীয়া (রহঃ)-এর স্নেহধন্য শিষ্য ছিলেন এবং শাইখের মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি তাঁর সাথেই ছিলেন। এমনকি জিহাদের ময়দান থেকে শুরু করে জেলখানাতেও তিনি তাঁর থেকে আলাদা হননি। তিনি ইসলামী আকীদাহ, তাওহীদ, সুন্নাহ ও বিদআত-বিরোধী বিভিন্ন বিষয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। তার মধ্যে তাওহীদ ও সুন্নাহের প্রতি অগাধ ভালোবাসা, বিদআতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং ইবাদত-বন্দেগীতে নিষ্ঠা ছিল অন্যতম। ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) কিছু উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:
"যাদুল মা‘আদ ফী হাদ্য়ী খাইরিল ইবাদ"
"মাদারিজুস সালিকীন"
"শিফাউল আলীল"
"তিবেব নববী" (চিকিৎসাশাস্ত্রে তাঁর অনন্য অবদান)
তাঁর উস্তাদ বৃন্দ -
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) যে সমস্ত আলেম-উলামার কাছ থেকে তালীম ও তারবীয়াত হাসিল করেন, তাদের মধ্যে রয়েছেনঃ
শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমীয়াহ (রহঃ)।
আহমাদ বিন আব্দুদ্ দায়িম আল-মাকদেসী (রহঃ)।
তাঁর পিতা কাইয়্যিমুল জাওযীয়াহ (রহঃ)।
আহমাদ বিন আব্দুর রহমান আন্ নাবলেসী (রহঃ)।
তাঁর ছাত্রসমূহ -
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) এর হাতে যে সমস্ত মনীষী জ্ঞান আহরণে ধন্য হয়েছিলেন, তাদের তালিকা অতি বিশাল। তাদের মধ্যে রয়েছেনঃ
বুরহান উদ্দ্বীন ইবরাহীম বিন ইবনুল কাইয়্যিম।
ইমাম ইবনে রজব (রহঃ)।
হাফিয ইমাম ইবনে কাছীর (রহঃ)।
তিনি একজন নিরলস সাধক, যিনি দীর্ঘ সময় ইবাদত করতেন, বিশেষ করে তাহাজ্জুদ ও কুরআন তিলাওয়াতে মগ্ন থাকতেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর ইলমী ও আধ্যাত্মিক খেদমত মুসলিম উম্মাহর জন্য অমূল্য দান হয়ে রয়েছে। ইবনুল কাইয়্যিম ৭৫১ হিজরী সনে মারা যান এবং দামেস্কের বাবে সাগীর গোরস্থানে তাঁর পিতার পাশে দাফন করা হয়।