নারী-পুরুষের সমষ্টিই পরিপূর্ণ মানবসমাজ। পৃথিবীর ঊষালগ্ন থেকেই জীবিকার প্রয়োজনে নারী-পুরুষ যৌথভাবে প্রকৃতির সাথে সংগ্রাম করে আসছে। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ভিতর দিয়ে তারা প্রকৃতিকে জয় করে আধুনিক সমাজ-সভ্যতা গড়ে তুলেছে। আদি সাম্য-ব্যবস্থায় কৃষি-সভ্যতা বিকাশের অগ্রদূতও নারী। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সমাজ যখন থেকে শ্রেণিবিভক্ত হয়েছে— এক শ্রেণি শোষক, অন্য শ্রেণি শোষিত। এক শ্রেণি উৎপাদন করে আর সেই উৎপাদিত পণ্যের মালিক হয় যারা উৎপাদনে কাজ করেন না। আর এই সমাজব্যবস্থায় নারী পুরুষের সম্পত্তি হিসেবে ও ভোগ্য সঙ্গী হয়ে পরিবারে বন্দি হয়েছে পুরুষের সন্তান তৈরির যন্ত্র হিসেবে। শিক্ষার অভাবে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে, চেতনার অভাবে স্বাধীনতা ও পরাধীনতার পার্থক্য বোঝার অনুভূতিও নারীরা হারিয়ে ফেলেছে। নারীর এই অক্ষমতা ও অজ্ঞতাই পুরুষকে পরিবারের স্বামী বানিয়ে ফেলেছে। আর পুরুষ নারীর নাকে নোলক ও শাঁখা-সিঁদুর পরিয়ে স্বামীত্বের নিদর্শন স্মরণীয় করে রেখেছে। একই শ্রেণির মাঝে বসবাস করে একজন বিত্তবান নারী, বিত্তবান পুরুষের মতো সে-ও নিম্নশ্রেণির পুরুষকে অপমান করছে, শোষণ করছে। টাকার বিনিময়ে তার মেধা-প্রতিভা ভিন্নখাতে ব্যবহার করছে তাদের শ্রেণির ভিত্তি টিকিয়ে রাখার জন্য। সেই নারীই তার নিজস্ব শ্রেণির মধ্যে পুরুষের ওপর নির্ভরশীল ও নির্যাতিত!