"বৃষ্টিমহল ২" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ ছয়টি ছেলেমেয়ের বন্ধুত্বকে কেন্দ্র করে বৃষ্টিমহলের বিশাল প্রেক্ষাপটে উপস্থাপিত হয়েছে পারিবারিক টানাপােড়েন, সামাজিক বৈষম্য, দেশপ্রেম, মূল্যবােধের তারতম্য, মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্ধ এবং গভীর জীবনবােধ! আধুনিক বাংলা সাহিত্যে বৃষ্টিমহল নিঃসন্দেহে এক ব্যতিক্রমী সংযােজন। এর কাহিনী, বর্ণনাভঙ্গি, জীবনদর্শন সমস্তই মৌলিক, এবং অভিনব। প্রতিটি চরিত্রের সূক্ষ্মতর চিত্রণ এবং সম্পর্কের উত্থান-পতন পাঠককে এক অনন্য অভিজ্ঞতার সম্মুখীন করে তুলবে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ তে প্রকাশিত হয়েছিল বৃষ্টিমহল প্রথম খণ্ড। প্রথম খণ্ডের আশাতীত সাফল্যের প্রায় দুবছর পর ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত হলাে বৃষ্টিমহল দ্বিতীয় খণ্ড। পাঠকগণের অধীর অপেক্ষা এবং ধৈর্য বিবেচনা সাপেক্ষে একুশে বইমেলার তিনমাস আগেই উপন্যাসটি আত্মপ্রকাশ করল। বন্ধুদের আলাদা জায়গা থাকে। যে জায়গাটা উচ্ছ্বাসের, আনন্দের, নির্ভরতার এবং স্বস্তির। ওরা ছয়জন এই বিশেষ স্থানের নাম দিয়েছে বৃষ্টিমহল। শুধু নাম দিয়েই ক্ষান্ত হয় নি। একটা কাচ-দেয়ালের মহল বানানাের স্বপ্নও দেখে ফেলেছে। যে মহলের চারিধার থাকবে আয়না দিয়ে ঘেরা। মহলের ওপরের কাচের আচ্ছাদনে আকাশ সর্বক্ষণ তার মুখখানি দেখতে পাবে। তারপর বর্ষাকালে যখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামবে, মহলের গায়ে বৃষ্টি তার ইচ্ছে মতন আলপনা আঁকবে আর মহলের বাসিন্দাদের মনে হবে। ছাদটা আসলে কাচের নয়, আয়নার নয়, ছাদটা আসলে বৃষ্টির! এই ছেলেমানুষি স্বপ্নের বাস্তবায়ন কখনও হবে কী না তা ওরা জানে না, তবে এটুকু জানে যে ওদের প্রত্যেকের বুকের ভেতরে একটি করে বৃষ্টিমহল আছে। থাকবে ততদিন, যতদিন ছয়জনের এই বন্ধুত্ব অক্ষুন্ন থাকবে। ওরা চায় আজীবন এই বৃষ্টিমহলকে টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু চলার পথে যদি কখনাে কোন এক প্রলয়ংকরী কালঝড় তীব্র বেগে ছুটে এসে গুড়িয়ে দিতে চায়। বৃষ্টিমহলকে, ছিনিয়ে নিতে চায় ওদের বন্ধুত্ব, তখন কী করবে। বৃষ্টিমহলের বন্ধৱা? সেই ঝড়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারবে কি? সমস্ত বাধাবিপত্তি পায়ে ঠেলে শক্ত করে ধরতে পারবে কি একে অন্যের হাত? জীবন যুদ্ধে শেষ অবধি কে জিতবে? পরিবার? স্বার্থ? প্রেম? বিবেক? নাকি বন্ধুত্ব?
ওয়াসিকা নুযহাতের লেখালেখির হাতে খড়ি খুব ছোট বেলায়। স্কুল ম্যাগাজিনের গন্ডি পেরিয়ে প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় প্রথম আলোর 'ছুটির দিনে' পত্রিকায়। ২০১৫ সালে 'ভোরের কাগজ' ঈদ সংখ্যায় প্রকাশ পায় উপন্যাস 'মাঝে মাঝে তব'। এরপর ২০১৬'র অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রথম বারের মতো মলাটবন্দি হয়ে একক বই হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে উপন্যাস 'খাঁচার ভিতর অচিন পাখি'। নিয়মিত লেখিকা ছিলেন 'কিশোর তারকালোক' সহ সমকালীন বেশ কিছু কিশোর পত্রিকায়। এছাড়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত রয়েছেন বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকার সাথে। আইন বিষয়ে লেখাপড়া এবং কর্মজীবনের সূচনা হলেও সাহিত্যের মাঝেই তিনি খুঁজে পান আত্মিক মুক্তি এবং বেঁচে থাকার তীব্র স্বাদ। যদিও নিজেকে তিনি সাহিত্যিক দাবী করতে নারাজ, নিজের সম্পর্কে প্রায়শই বলে থাকেন, 'আমি সাহিত্যিক নই, খুব সাধারণ একজন গল্পকার।'