"পঞ্চরত্ন" বইয়ের ফ্ল্যাপে লিখা প্রিয়তু শ্যামা একজন নতুন লেখিকা হিসেবে তার সংবেদনশীল কলমে ‘পঞ্চরত্ন’ উপন্যাসটিকে যেভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন সেটা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। আশা করা যায় এই উপন্যাসটি লেখিকার এক অনবদ্য সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। উপন্যাসটি পর্যায়ক্রমে এগিয়েছে পাঁচজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুর জীবনের নানান চড়াই-উত্রাই, প্রেম-অপ্রেমের মধ্য দিয়ে। আমরা আসলে প্রকৃত বন্ধু, প্রেম কিংবা স্বপ্ন বলতে ঠিক যা যা বুঝি বা দেখতে চাই তার সবকটাই ‘পঞ্চরত্ন’ উপন্যাসে পাঁচটি বন্ধুনামক রত্বের মধ্যে দেখা যাবে। শ্যামল, সায়ন্তিকা, পায়েল, অনিরুদ্ধ আর রুদ্র এরাই এগিয়ে নিবে গােটা উপন্যাসটিকে। এই উপন্যাস সম্পর্কে আসলে সংক্ষিপ্ত করে কিছু লিখা একেবারেই অসম্ভব। এটা লেখিকার এমন এক সৃষ্টি যেখানে পাঠক প্রতি পদে পদে ধাক্কা খাবেন, আবেগতাড়িত হবেন, কোনও চরিত্রের মঙ্গল কামনায় মনে মনে প্রার্থনারত হতে পারেন আবার হয়তাে কোনও একটা চরিত্রের দৃঢ়তায় বিস্মিতও হবেন। প্রিয়তু শ্যামা ‘পঞ্চরত্ন' উপন্যাসের নামকরণে যেমন সূক্ষ্মতা এনেছেন তেমনি রচনারীতিতেও অভিনবত্ব আনার আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন যা উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে একজন পাঠক নিজেই অনুধাবন করতে পারবেন।
প্রিয়তু শ্যামার জন্ম ব্রহ্মপুত্র নদের শহর ময়মনসিংহে। ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্ম। তাঁর পড়াশোনা, চাকরি, জীবনের উচ্ছল দুরন্ত দিনগুলো সব এই শহরকে কেন্দ্র করেই। তিনি মূলত নারীর কথাই বলেন। নারী মনের অন্ধিসন্ধিতে তাঁর সদা সহজ বিচরণ। নারী হৃদয়ের গহিন সব কথাকে সহজাত বাক্যপ্রয়োগে পাঠকের সামনে তুলে ধরতে তিনি সিদ্ধহস্ত। নারীর দুঃখ-দূর্দশা, চাওয়া-পাওয়া তাঁর কলমের ডগায় চমৎকারভাবে ফুটে ওঠে। তাঁর প্রথম উপন্যাস 'পঞ্চরত্ন' পাঠক হৃদয়কে দারুণভাবে ছুঁয়ে গিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় 'জীবন এবং দীর্ঘশ্বাস', 'আমার আকাশে শরৎ আসে না' এবং নয়নতারা বইয়ের আত্মপ্রকাশ। এই বইগুলোও পাঠক সমানভাবে গ্রহণ করেছেন। লেখক সবসময় তাঁর লেখনির মাধ্যমে নিজেকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করেন, যা পাঠক পড়া মাত্রই স্পষ্ট বুঝতে পারবেন।