"তবু ভালোবেসো" বইয়ের ফ্ল্যাপে লিখা সবার একটা নিজের জগত আছে। নিজের মতাে করে বাঁচে মানুষ। মনের গভীর গহিনে কি কথা আছে তার তল পাওয়া যায় না। একজন মানুষ আরেকজন মানুষের খুব কাছে আসে, আসতে চায়। আকুল হয়ে। আবার মনের অজান্তে একজন দূরে সরে যায় আরেকজনের। টানাপােড়েন শুরু হয় জীবনের। একই ছাদের নিচে বাস করে বছরের পর বছর দুজন মানুষ কিংবা একসঙ্গে কয়েকজন। তারা কি পরস্পর ছুঁতে পারে পরস্পরকে! ডাক্তার মুহম্মদ মুফাজ্জল করিম, প্রফেসর অব সাইকিয়াট্রি। বয়স পঞ্চান্ন। মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষকতা করার সময় তার থার্ড ইয়ারের ছাত্রী নাদিয়াকে ভালােবেসে বিয়ে করেছিলেন গােপনে। ডাক্তার মুহম্মদ মুফাজ্জল করিমকে আমরা দেখি রাবেয়া বেগমের স্বামী হিসেবে। নাদিয়া জাফরের স্ত্রী। ডাক্তার মুহম্মদ মুফাজ্জল করিম আর নাদিয়ার সন্তান নিতুন বেড়ে ওঠে জাফর আর নাদিয়ার সন্তান পরিচয়ে। রাবেয়া বেগম মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তার সাড়ে তিন বছরের মেয়ে তিতি নৌকা ডুবে মারা গেলে। সুরাইয়া রহমান প্রায়ই বাড়িতে অশরীরি কোনাে কিছুর অস্তিত্ব অনুভব করেন। ধীরে ধীরে তা এমন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায় যে সেই সব অশরীরি অস্তিত্ব সুরাইয়ার অনেক আকাঙ্ক্ষার ফল গর্ভের সন্তানকে গর্ভেই মেরে ফেলবে বলে তিনি ধারণা করেন। দিশেহারা বােধ করেন সুরাইয়ার স্বামী ইঞ্জিনিয়ার ইমামুর রহমান। নাটা আশ্রয় খোঁজে কুমুর কাছে। কুমু আশ্রয় দিতে পারে না নাটাকে। তবুও বলে, নতুন এক পৃথিবীর জন্ম দেব বলে আমরা জন্মেছি। আমরা জন্মাব আবার নতুন আরেকটি পৃথিবীর জন্ম দিতে। তবু ভালােবেসাে ভালােবাসার গল্প। মানব-মানবীর চিরন্তন সম্পর্কের বুনন। সন্তানের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষার কথা। তবে সরলরৈখিক গল্প নয়। তবু ভালােবেসাে সংবেদী মননে লেখা বহুমাত্রিক অনন্য ভালােবাসার গল্প।