২০১৩ সালের ১লা ফেব্রæয়ারি থেকে বিশ^ হিজাব দিবস পালিত হয়ে আসছে। হিজাব দিবসের ধারণা এসেছে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক নাজমা খানের মাথা থেকে। যিনি ১১ বছর বয়সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তার হিজাবের কারণে সব ধরণের হয়রানি ও বৈষম্যের শিকার হন। হিজাবের কারণে এই বৈষম্যের প্রতিবাদ স্বরূপ অন্তত একদিনের জন্য হলেও মুসলিম বোনদের পাশাপাশি অমুসলিম বোনদেরকেও হিজাব পরে তাদের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করার আহŸান জানিয়েছেন।
ইসলামী শরিয়তে হিজাব বা পর্দার বিধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিজ্ঞানসম্মত। হিজাব বা পর্দা নারীর মর্যাদা ও ব্যাক্তিত্বের প্রতীক। ইসলাম নারী পুরুষকে পর্দা করার নির্দেশ দিয়েছে, উভয়ের বিচরণ ক্ষেত্র পৃথক করেছে এবং উভয়ের দৃষ্টি অবনত রাখার বিধান দিয়েছে। যেই সমাজ নারীকে বেহায়াপনা ও অশ্লীলতায় নামিয়ে আনে, সেই সমাজ অশান্তি ও সকল পাপাচারের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়। আর এজন্যই ইসলামে সুনির্দিষ্ট বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে যে কোন প্রকার সৌন্দর্য বা ভালবাসার প্রদর্শনী ও চর্চা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। নারী জাতিকে লক্ষ করে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সাজসজ্জা প্রদর্শন করে বেড়িও না যেমন প্রাচীন জাহেলী যুগে প্রদর্শন করা হত।’ (সূরা আহযাব : ৩৩)। এ ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শনের পরিনতি কি ভয়াবহ হতে পারে তা দেখতে চাইলে পশ্চিমা বিশ্বের দিকে তাকানোই যথেষ্ট, খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ছয় মিনিটে একজন নারী ধর্ষিতা হচ্ছে। হিজাব নারীর নিরাপত্তা বেষ্টনী হিজাব বা পর্দার বিধান নারীকে আবদ্ধ বা বন্দি করার জন্য নয় বরং নারী-পুরুষের আচার-আচরণে শালীনতা বজায় রাখার জন্য এবং নারীর সতীত্ব, সম্ভ্রম রক্ষা ও নিরাপত্তা দানের জন্যই ইসলামে হিজাবের বিধান রাখা হয়েছে। পর্দাহীনতা নারীর জীবন অনিরাপদ করে তাকে ঠেলে দেয় ধ্বংসের মুখে এবং তার জন্য ডেকে আনে বিপর্যয়। পর্দা সম্পর্কিত ইসলামের নির্দেশনাগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে যে, এ বিধানটি নারীর নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সমাজের পবিত্রতা রক্ষার্থে দেয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে নবী! আপনি আপনার পতœীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।’ (সূরা আহযাব : ৫৯)।